প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বাড়ানোর আশ্বাস দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন গ্রেড পে ৩৬০০ করার ভাবনার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। একইসঙ্গে গ্রেড পে ৩২০০ অনুমোদনের কথাও এদিন জানিয়েছেন পার্থ। তিনি বলেন, "কবে থেকে হবে, কি ভাবে হবে তার জন্য় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোথা থেকে টাকার সংস্থান হবে তা অর্থ দফতর দেখছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই বেতন কাঠামো বাস্তবায়িত হবে।" পাশাপাশি নিয়ম মেনে বদলির বিষয়টিতেও জোর দেওয়ার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। এদিন পার্থ বলেন, ‘‘সকলের কাছে আবেদন করব, মুখ্যমন্ত্রী বিবেচনা করেছেন। অনশন প্রত্যাহার করুন’’।
মন্ত্রী এদিনের সভায় রাজ্য়ের বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলের মিডডে মিলের ব্য়বস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্য়, "কোথাও কোথাও মিডডে মিল নিয়ে অনিয়ম চলছে।" পাশাপাশি তিনি বলেন, "সত্য়ি কথা বলতে পঞ্চম শ্রেণির ক্ষেত্রে একটি জেলায় ৮০হাজার জুতো নিয়ে গিয়েছে আর পোষাক গিয়েছে ১ লক্ষ। এটা কি করে হয় জানি না।" মন্ত্রীর আক্ষেপ, "এই আজগুবি হিসাবে তো আগের সরকার চলেছে।"
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষকদের পাশে ‘অসহায়’ শঙ্খ ঘোষ
যদিও শিক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাবে কর্ণপাত করেননি প্রাথমিক শিক্ষকরা। এদিন ১৩ দিনে পড়েছে শিক্ষকদের অনশন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস শুনে প্রাথমিক শিক্ষকদের তরফে জানানো হয়, ‘‘৩২০০ বা ৩৬০০ যাই হোক না কেন, কোন গ্রেডে কাকে ফেলবেন সেটা বোঝাতে হবে তো। উনি ধোঁয়াশায় আছেন। উনি প্রাথমিক শিক্ষশকদের নিয়ে খেলছেন। কেন লুকিয়ে বৈঠক করলেন? ওঁর উচিত ছিল সবার মাঝে বসে বৈঠক করার। শিক্ষামন্ত্রী যদি অগ্রাহ্য করেন শিক্ষকদের বিষয়টি, তাহলে ক্ষোভ এত সহজে মিটবে না’’। উল্লেখ্য, বেতন বৃদ্ধি-সহ বেশ কিছু দাবিতে অনশনে বসেছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ।
আরও পড়ুন: বেতনবৃদ্ধির দাবিতে অনির্দিষ্টকাল অনশনের পথে প্রাথমিক শিক্ষকেরা
অন্যদিকে, প্রাথমিক শিক্ষকদের অনশন নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, ‘‘দুর্বিষহ প্রাকৃতিক অবস্থার মধ্যেও রাস্তায় নেমে আমরণ অনশন করছেন। সমস্ত শুভবোধসম্পন্ন মানুষের কাছে অত্যন্ত দুঃখের ও লজ্জার ব্যাপার। আমাদের মতো অগ্রসর দেশে ও অগ্রসর রাজ্যে কেন এমন ঘটনা ঘটবে? এই ঘটনার আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারকে অনুরোধ করছি, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এবং বাস্তবিক অবস্থার ভিত্তিতে তাঁরা যেন অবিলম্বে অনশনকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দাবিদাওয়া নিয়ে অবগত হন। ভয়ঙ্কর কোনও দুর্ঘটনা ঘটার আগে এ সমস্যার সমাধান করুন’’।
এদিনের সভায় শিক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তব্য়ে জানিয়ে দেন কলেজগুলোতে আর অতিথি অধ্য়াপক নেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, "যাঁরা রয়েছেন তাঁদের পাশে কি ভাবে দাঁড়ানো যায় সেকথা ভাবছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। ওদের সরকার নিয়োগ করেনি, পরিচালন সমিতি নিয়োগ করেছিল। তবে এর জন্য় আবার বুকে পোস্টার লাগিয়ে দাঁড়িয়ে যাবেন না।"