Gariahat Double Murder: গড়িয়াহাট জোড়া হত্যামামলায় একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। এই খুনের নেপথ্যে কোনও পেশাদার খুনি! এমনটাই মনে করছেন গোয়েন্দারা। সুবীরবাবু এবং তাঁর গাড়ির চালকের গলা থেকে ঘাড় পর্যন্ত গভীর ক্ষত। মৃত্যু নিশ্চিত করতেই পেশাদার খুনিরা এভাবে আঘাত করে। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি খুনের পর অস্ত্র বালিশে রাখা ছিল। মৃতদেহে স্পষ্ট হয়েছে প্রতিরোধের চিহ্ন। সেই পাশ বালিশে রক্তের দাগ দেখে পুলিশকে এই সুত্র দিয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। কোনও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এই কাজ করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের একটি সুত্র বলেছে, খুনের পর সম্ভবত বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেনে করে চম্পট দিয়েছে আততায়ীরা।
এদিন সুবীরবাবুর কাকুলিয়ার বাড়িতে স্নিফার ডগ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই কুকুর বাড়ি থেকে বালিগঞ্জ স্টেশন পর্যন্ত দৌড়ে এসে প্ল্যাটফর্মে উঠে খেই হারিয়ে ফেলে। সেই গতিবিধি দেখেই সন্দেহ হয়েছে গোয়েন্দাদের। এমনকি, আততায়ীদের সঙ্গে পরিচিত কেউ ছিল, ধারণা গোয়েন্দাদের। কারণ সেই পরিচিতকে চিনে ফেলায় সুবীরবাবুর ড্রাইভারকে খুন করে অভিযুক্তরা। এমনকি, জানা গিয়েছে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সক্রিয় হোয়াটসঅ্যাপে সক্রিয় ছিলেন সুবীরবাবু। তারপরেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় অন্যদের।
এদিকে, মঙ্গলবার কেওড়াতলায় সুবীরবাবুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। যেহেতু কর্মসূত্রে সুবীরবাবুর ছেলে এবং মেয়ে বাইরে থাকেন। তাই তাঁদের আসা পর্যন্ত নিউ টাউনের বাড়িতেই রাখা ছিল তাঁর দেহ। তাঁর আগেই লালবাজারের গোয়েন্দারা নিউ টাউনে গিয়ে সুবীরবাবুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
রবিবার গড়িয়াহাটের অভিজাত কাকুলিয়া রোডের বহুতল থেকে জোড়া মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সুবীর চাকী এবং রবীন মণ্ডল। বন্ধ দরজা ভেঙে তিন তলা থেকে উদ্ধার হয়েছে বাড়ির মালিক সুবীরের দেহ। আর দো’তলায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল সুবীরবাবুর গাড়ির চালক রবীনের দেহ। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে গড়িয়াহাট থানা এবং লালবাজারের হোমিসাইড শাখা।
দু’জনকেই খুন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই অনুমান পুলিশের। মৃতদেহ দু’টির শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিশেষ করে গলা, পা এবং বুকে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারবে পুলিশ। কাকুলিয়া রোডের ওই বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক দল। সেই বাড়িতে তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিত থাকলে, কী করে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ থাকে? এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের।
পড়শিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, যে বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেটা সুবীরবাবুর পৈতৃক বাড়ি। তিনি এখন নিউ টাউনের অভিজাত আবাসনে মা, শাশুড়ি এবং স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। ছেলে এবং মেয়ে, দু’জনেই প্রতিষ্ঠিত এবং কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। রবিবার দুপুরে ড্রাইভারকে সঙ্গে নিয়ে গড়িয়াহাটের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাত পর্যন্ত কোনও খোঁজ না মেলায় পরিবার পড়শিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাঁরাও বাড়ি গিয়ে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশে খবর দেন। তারপরেই দরজা ভেঙে ওই দু’জনের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন