ফের স্তব্ধ হল কলকাতা। রুদ্ধ হল রাজপথ। শিয়ালদা-ধর্মতলামুখী এসএন ব্যানার্জি রোড দীর্ঘক্ষণ বন্ধ রাখতে হল। ১১-১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কলকাতা সফরের সময় দিন-রাত অবরুদ্ধ হয়েছিল কলকাতা। তারপর বুধবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি ও এনআরপি-র বিরোধিতায় রাস্তায় বসে পড়লেন আন্দোলনকারীরা।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ তপসিয়া থেকে সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর বিরোধী মিছিল শুরু হয়। মিছিল যাওয়ার কথা ছিল ধর্মতলায়, ওয়াই চ্যানেল পর্যন্ত। কিন্তু পুরসভা সংলগ্ন রাস্তায় মিছিল ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। ধর্মতলায় কলকাতা পুরসংস্থার প্রধান দফতরের তিন দিকের রাস্তায় অবস্থান বিক্ষোভ করলেন হাজার হাজার মানুষ। ঘটনাস্থলে হাজির ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুরসভার সামনে এসএন ব্যানার্জি রোডে ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকানো হয়। ধর্মতলার পরিবর্তে তখন কলকাতা পুরসভা ঘিরে অবস্থান চলতে থাকে।
আরও পড়ুন: আমি বিজেপির প্রশান্ত কিশোর নই যে ওঁদের বার্তা দেব: বৈশাখী
সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর নিয়ে কলকাতায় আন্দোলন ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। কিছুতেই থামছে না প্রতিবাদ। রোজ রাস্তায় নামছেন প্রতিবাদকারীরা। পার্ক সার্কাসে মুসলিম মহিলাদের অবস্থান চলছে। ইতিমধ্যে সেই স্থানেও শয়ে শয়ে মানুষ গিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ জানাতে হাজির হচ্ছেন। সেখানে গিয়ে আন্দোলনকে সমর্থন করে এসেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। আয়োজকরা জানিয়েছেন, তাঁদের ওই অবস্থান-ধরনা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক।
আরও পড়ুন: জনতার দরবারে মমতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন শাহ
ধর্মতলায় রানি রাসমণি রোডে এখনও অবস্থান করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এই সভা মঞ্চে বেশ কয়েকবার এসে বক্তব্য রেখেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদীর সফরের দিন এই মঞ্চে ধর্মতলার অন্য প্রতিবাদকারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার শহিদ মিনারে এনআরসি বিরোধী সমাবেশ করেছে বামেরা। কংগ্রেসও মিছিল-বিক্ষোভ করছে নিয়মিত।
এদিন বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ মিছিল কলকাতা পুরসভার সামনে থামিয়ে দেয় পুলিশ। তারপর পুরসভার দিকে মিছিলের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় রাস্তায় বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। মিছিলকারীদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। সিএএ, এনআরসি বিরোধী পোষ্টার। এদিন সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর বিরোধী লেখা টি শার্টও চোখে পড়ে। প্রতিবাদকারীদের মধ্যে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১১ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে তিনটের সময় সিএএ, এনআরসি বিরোধী মিছিলে অবরুদ্ধ হয়েছিল ধর্মতলা। অবস্থান চলেছিল পরের দিন পর্যন্ত। এদিন ফের একই দাবিতে অবরুদ্ধ হল কলকাতা। মিছিলকারীরা জানিয়ে দিলেন, তাঁদের এই আন্দোলনও অরাজনৈতিক।