আইনি লড়াইয়ে আরও বিপাকে আইপিএস রাজীব কুমার। পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করা যাবে সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত পুলিশ কর্তা রাজীব কুমারকে। বৃহস্পতিবার, জানিয়ে দিল আলিপুর আদালত। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অনুযায়ী, ধর্তব্যযোগ্য অপরাধ রয়েছে এই দুঁদে আইপিএসের বিরুদ্ধে। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা যেতে পারে। শীর্ষ আদালতের এই রায়ের রায়েরই প্রতিফলন ঘটেছে আলিপুর আদালতের রায়ে।
বৃহস্পতিবার, আলিপুর আদালতে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানার দাবি জানান সিবিআই-এর আইনজীবী। তাঁর সওয়ালের প্রেক্ষিতে বিচারক বলেন, সুপ্রিম কোর্ট-কলকাতা হাইকোর্ট উভয়েই যখন প্রয়োজনে গ্রেফতারের অনুমতি দিয়েছে, তাহলে ফের কেন এই আবেদন। সিবিআই-এর আইজীবী তখন বলেন, তাঁরা জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইছেন। বিচারক এরপর জানতে চান, কেন জামিন অযোগ্য পরোয়ানা চাইছেন তাঁরা? উত্তরে তিনি বলেন, দাউদ ইব্রাহিমের মামলাতেও এমন আবেদন জানানো হয়েছিল। অন্যদিকে, রাজীবকুমারের আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেল আগে থেকেই চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন যে তিনি ২৫ তারিখ পর্যন্ত ছুটিতে থাকবেন এবং তদন্তের প্রতিটি পর্যায়ে তিনি সাহায্য করেছেন। রাজীব কুমার পলাতক নন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাহলে সিবিআই কেন এই পদক্ষেপ করছে? দু’পক্ষের এই সওয়াল শোনার পর বিচারক আপাতত রায় স্থগিত রেখেছেন।
আরও পড়ুন: যাদবপুরে বাবুলকে উদ্ধারে রাজ্যপাল, ধনকরের সমালোচনায় তৃণমূল
এদিকে, রাজীব কুমারকে ঘিরে গতকাল সকাল থেকেই ফের টানটান নাটক শুরু হয়। কলকাতার প্রাক্তন নগরপালের খোঁজে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাইপাসের এক পাঁচতারা হোটেলে হানা দেয় সিবিআই। হোটেলের রান্নাঘর দিয়ে নাটকীয়ভাবে ঢোকেন সিবিআই-এর আধিকারিকরা। রুবি মোড়ের কাছে এই হোটেলে পৌঁছোয় সিবিআই-এর একটি দল। দলে ছিলেন সিবিআই-এর ৪ আধিকারিক। হোটেলের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর আগে দুপুর দেড়টা নাগাদ কলকাতা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে রাজীব কুমারের বাড়িতে ঢুকে পড়েন জনা পাঁচেক সিবিআই তদন্তকারী। সূত্রের খবর, কাউকে না জানিয়েই কার্যত হঠাৎ হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। দেখা যায়, পার্ক স্ট্রিটে রাজীবের সরকারি আবাস্থলে ঢুকে পড়েছে সিবিআই-এর সাদা রঙের একটি গাড়ি। এদিন প্রায় ৪৫ মিনিট কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে ছিলেন সিবিআই অফিসাররা। অথচ কেউ নাকি বুঝতেই পারেননি, যে তাঁরা সিবিআই আধিকারিক। পরে বিষয়টি নজরে আসতেই পুলিশ তাঁদের ঘিরে ধরে বের করে দেয়। মনে করা হচ্ছে, রাজীব কুমারকাণ্ডে বুধবার ভিনরাজ্যের যে ১২ জন দুঁদে সিবিআই আধিকারিককে উড়িয়ে আনা হয়েছিল কলকাতায়, এদিনের অভিযান তাঁদেরই কীর্তি।
এইসবের মধ্যেই, বৃহস্পতিবার, কলকাতার প্রাক্তন নগরপালকে ফের নোটিস দেওয়া হয়েছে সিবিআই-এর তরফে। রাজীবের পার্ক স্ট্রিটের বাড়িতে এই নোটিস দেওয়া হয়। ১৬০নং ধারায় বর্তমান এডিজি সিআইডি রাজীবকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এই আইপিএসের খোঁজে শুক্রবারও বিভিন্ন জায়গায় হানা দিতে পারেন সিবিআই গোয়েন্দারা।