Advertisment

গেরুয়া পরশ? রাম মূর্তির বায়না দিলেন তৃণমূলের পরেশ পাল

একদিকে 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনিতে যখন নিয়মিত মেজাজ হারাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন তাঁরই দলে এমন 'রাম প্রীতি' বেজায় অস্বস্তিতে ফেলছে রাজ্যের শাসক দলকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কুমোরটুলিতে তৈরি হচ্ছে রামের মূর্তি, ছবি, অরুণিমা কর্মকার

দুর্গাপুজো আসতে মাত্র মাস তিনেক বাকি, কিন্তু কুমারটুলির শিল্পী রাজা পালের ব্যস্ততার কারণ দুর্গা প্রতিমা নয়। বরং তিনি এখন দিনরাত মিলিয়ে কাজ করে চলেছেন রাম মূর্তি নিয়ে। তবে শুধু রামই নয়, শিল্পী রাজা পালের ঘরে এখন চলছে রাম, সীতা, লক্ষণ এবং হনুমান মূর্তি প্রস্তুতির কাজ। পটুয়া পাড়ায় যাতায়াত আছে এমন মানুষের কাছে দুর্গাপুজোর মরসুমে রাম মূর্তি প্রস্তুতির এই দৃশ্য মোটেই চেনা নয়। কিন্তু, চমক এখানেই শেষ নয়। এই মূর্তি প্রস্তুতির বরাত যিনি দিয়েছেন, তাঁর নাম-পরিচয়তেই আসল চমক।

Advertisment

শিল্পী রাজা পাল বলেন, "চারিদিকে এখন তো রাম রাজত্বের হাওয়া, যিনি বায়না দিয়েছেন তিনি বিজেপির লোক নয়। বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল। কেন বানাতে দিয়েছেন সে বিষয়ে কিছু জানি না। মাস খানেক আগে রাম-লক্ষণ-সীতা ও হনুমানের মূর্তি বানানোর অর্ডার দিয়েছেন"। একদিকে 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনিতে যখন নিয়মিত মেজাজ হারাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন তাঁরই দলে এমন 'রাম প্রীতি' বেজায় অস্বস্তিতে ফেলছে রাজ্যের শাসক দলকে।

এ বিষয়ে মন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, "কে কী করছেন তা নিয়ে আমি মতামত দেব না। তবে আশা করি, দলের অনুমতি নিয়েই সব কাজ করা হবে"। এ বিষয়ে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন,"ভুতের মুখে রাম নাম। মানুষ তো বোকা না, মানুষ সব বোঝে। রামের মূর্তি তৈরিতে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই, এটা তো ভালো কথা। তৃণমূলের এক নেতা রাম কথা করবে বলে চাপে পড়েছেন, এই মুর্তি গড়তে গিয়ে না এবার ওঁকেও দুঃখ কষ্ট সহ্য করতে হয়।"

publive-image ১১ ফুটের রাম। ছবি: অরুণিমা কর্মকার

বাংলায় গেরুয়া বাহিনীর উত্থানে প্রহর গুনছেন রাজনীতির অনেক কুশীলবই। শেষ পর্যন্ত সেই দলেই কি নাম লেখাতে চলেছেন পরেশ পালও? দলের বিধায়কের এমন মনভাব নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনাও শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেও। তবে সায়ন্তন বসু এবিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

publive-image রাম তৈরির কাজ প্রায় শেষ, বাকি রঙের পোলেপ, ছবি: অরুণিমা কর্মকার

রাজা পাল জানাচ্ছেন, মূর্তি তৈরির কাজ শেষ হতে সময় লাগবে আরও এক মাস। শিল্পীর ঘর ঘুরে দেখা গেল, ১১ ফুট উঁচু ফাইবার গ্লাসের রামের মূর্তি তৈরি হয়ে গিয়েছে। হনুমান মূর্তির কাজও প্রায় শেষ। বাকি কেবল সীতা ও লক্ষণ মূর্তির কাজ। জানা যাচ্ছে, বেলেঘাটা এলাকাতেই এই মূর্তিগুলি স্থাপন করা হবে। শিল্পী রাজা পাল জানিয়েছেন,"হনুমানের মূর্তির কাজও প্রায় শেষ"।

publive-image কলকাতায় প্রতিষ্ঠা হবে রামের মূর্তি, ছবি: অরুণিমা কর্মকার

এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে স্পষ্ট মেরুকরণের আবহে তৃণমূলের বিধায়ক হয়ে তিনি কীভাবে রাম মূর্তি গড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পরেশ পালের তরফে কোনও সদুত্তর মেলেনি৷ তবে তিনি জানিয়েছেন, বেলেঘাটার কাদাপাড়া এলাকায় বসানো হবে মূর্তিটি। তবে আগামী দিনে রাম, লক্ষণ, সীতা ও হনুমানের মূর্তিগুলি নিয়মিত পুজো করা হবে কি না সে বিষয়ে এখনই কিছু বলেতে চাননি বেলেঘাটার বিধায়ক।

উল্লেখ্য, তৃণমূল নেতা হয়েও রাম বা হনুমানের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করছেন এমন নজির কলকাতায় আগেও দেখা গিয়েছে। বিধাননগর স্টেশনের কাছে হনুমান মূর্তি প্রতিষ্ঠায় শিরোনামে এসেছিলেন বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। অন্যদিকে, 'রামকথা' আয়োজনের সময়েও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন মদন মিত্র। তারপর অবশ্য সেই আয়োজন বাতিল করে দেন তিনি। এবার সেই তালিকায় যোগ হল পরেশ পালের নাম। এখন দেখার, পরেশ সিদ্ধান্তে অবিচল থাকেন না রমে ভঙ্গ দেন।

Advertisment