Advertisment

এই আছে এই নেই, লুকোচুরি খেলছে রেশনের পেঁয়াজ

"এইমাত্র শেষ হয়ে গেল, আপনি আসতে দেরি করেছেন"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
onion price ration shop

"দাদা পেঁয়াজ আছে?" প্রশ্ন ভেসে আসতেই কালো মোটা ফ্রেমের চশমা খুলে (দৃষ্টিতে বিরক্তি স্পষ্ট), চোয়াল শক্ত করে, রেশন দোকানের কর্মচারী উত্তর দিলেন 'না'। উত্তর শহরতলির বরানগরের অন্য আরেক রেশন দোকানে এক মহিলা ফের একই প্রশ্ন করায় উত্তর এল, "এইমাত্র শেষ হয়ে গেল, আপনি আসতে দেরি করেছেন"। দৈনিক কত বস্তা পেঁয়াজ আসছে? জিজ্ঞাসা করতেই মৃদু হেসে দোকান মালিক বলেন, "উত্তর দিতে দিতে আমি কাহিল। এ চত্বরে এখনও ৫৯ টাকা কিলোর পেঁয়াজ পৌঁছায়নি"। সিঁথিরমোড়ের কাছে একটি রেশন দোকানে আবারও একই প্রশ্ন করলে, দোকানদার আর বাক্য ব্যয় না করে, দীর্ঘশ্বাস নিয়ে শ্লথ গতিতে মাথা নাড়লেন। মনে হল, তিনিও নেতিবাচক উত্তর দিতে দিতে হাঁপিয়ে উঠেছেন। পরবর্তী আরেক রেশন দোকানে যাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেল, বরানগরের রেশন দোকানগুলিতে এখনও রাজ্য সরকারের ভর্তুকি দেওয়া পেঁয়াজ এসে পৌঁছায়নি।

Advertisment

শোভাবাজারের বেনিয়াটলার নিকটে এক রেশন দোকানে পৌঁছে দেখা গেল লম্বা লাইন সেখানে। হাসি মুখে ৫৯ টাকা কেজির পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে খাস কলকাতায়। তখনও এক বস্তা মজুত আছে। প্রতিদিন কটা করে বস্তা আসছে? পেঁয়াজ ওজন করতে করতে ব্যস্ত শ্যামল রায় উত্তর দিলেন, "৪০ কিলোর দুটো বস্তা, তাও ঠিক নেই"। সোমবার থেকেই পেঁয়াজ আসছে? "হ্যাঁ, সোমবার সকালেই পেঁয়াজ ঢোকে দু-বস্তা। ১ ঘণ্টায় সব শেষ"। পেঁয়াজ কিনতে আসা এক ক্রেতা জানান, "সুবিধা তো হচ্ছে, প্রায় একশ টাকা কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারছি। দেখা যাক, এখন কত দিন এমনটা পাওয়া যায়"। শোভাবাজার এলাকার আরও দুটো রেশন দোকানে পৌঁছে দেখা গেল, দরজা বন্ধ, দরজার ওপর সাদা কাগজে বড় করে লেখা "পেঁয়াজ- নাই"। এরপর বৌবাজার এলাকার রেশন দোকানে গিয়ে জানা গেল, সোমবার এসেছিল দু-বস্তা পেঁয়াজ। কিন্তু, মঙ্গলবার আর আসেনি। বহু মানুষ এসে ফিরে যাচ্ছেন। এই রকম উনিশ-বিশ দৃশ্য এখন কলকাতার রেশন দোকানে।

onion ration রেশন দোকান থেকে পেঁয়াজ কিনছেন ক্রেতা

উল্লেখ্য, রবিবার সরকারিভাবে রেশন দোকানে ৫৯ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রির কথা ঘোষণা করা হয় রাজ্যের তরফে। বলা হয়, "রবিবার রাতেই রেশন দোকানে পৌঁছে যাবে পেঁয়াজের বস্তা। শহরের ৯৩৫টি রেশন দোকানে পাওয়া যাবে পেঁয়াজ"। সোমবার খড়গপুর যাওয়ার পথে সটান যদুবাবুর বাজারে ঢুকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিক্রেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "সরকার যদি ৫৯ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারে, আপনারা পারবেন না কেন?"

কোলে মার্কেটের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সৌম্য মজুমদার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "সরকার চাপ দিয়ে দাম কমাচ্ছে। মঙ্গলবার পেঁয়াজের দাম যাচ্ছে ৩২০০ টাকা মণ। রেশন দোকানের জন্য, সরকার ৮০ টাকা কিলো দরে পাইকারি বাজার থেকে পেঁয়াজ নিয়ে যাচ্ছে। এতে যাঁরা পেঁয়াজ লোড করে আনছে তাদের পরতায় পোষাচ্ছে না। প্রতি বস্তা তাদের প্রায় ৬০০ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। এমনটা চললে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করতে চাইবে না ব্যবসায়ীরা"। তিনি আরও বলেন, "আরও হপ্তা-দুয়েক এমন চলবে। সুখ সাগরের পেঁয়াজ ( বাংলার পেঁয়াজ) উঠলে অনেকটা দাম কমবে। এখন অন্ধ্রপ্রদেশের পেঁয়াজ আসছে বাংলায়। নাসিকের পেঁয়াজ আসা শুরু হলে দামটা কমে আসবে বলে মনে করছি।"

onion price
Advertisment