কলকাতার বেশ কিছু এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ঘুরে দেখলেন একদিকে বিজেপি কাউন্সিলর মীনা দেবী পুরোহিত, অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক স্মিতা বক্সী। অল্প বা ভারী বৃষ্টি ছাড়াও কলকাতার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে দিনের বেশ কিছু সময়। কলকাতা পুরসভাতে লিখিত অভিযোগ জানালেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে দাবি করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। মঙ্গলবার এই বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে দেখতে কলকাতা পুরসভার ড্রেনেজ বিভাগের আধিকারিকরা পৌঁছন বিভিন্ন ঘটনাস্থলে।
২২ নং ওয়ার্ডের কলাকার স্ট্রিট ও সত্যনারায়ণ পার্কের দু'নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকা ঘুরে কলকাতা পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ারের দল জানিয়েছেন, ম্যানহোলগুলি অবিলম্বে পরিষ্কার করা প্রয়োজন। কাদা ও প্লাস্টিক জমে যাওয়ার কারণে জল উপচে পড়ছে এখানে। একইসঙ্গে এলাকার যে সিউয়ারেজ বা নিকাশি পাইপলাইন আছে সেটিকেও পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তাঁরা। প্রাথমিকভাবে এতে যদি কাজ না হয়, তাহলে এই এলাকার সম্পূর্ণ পাইপলাইন তুলে ফেলে অন্য কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে বলেও আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানিয়েছেন টিম। তবে পুরো বিষয়টি তাঁরা জানাবেন সংশ্লিষ্ট মেয়র পারিষদকে।
এদিকে মেয়র পারিষদ তারক সিং বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষী প্রকল্পের টাকা পেলে এই কাজ তাঁরা খুব শীঘ্রই করে দিতে পারতেন, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ পাঠানোর পরেও এখনও সেই টাকা তাঁরা পাচ্ছেন না। যদিও এ ব্যাপারে বিজেপি কাউন্সিলার মীনা দেবী পুরোহিত পরিষ্কার জানিয়েছেন, "কলকাতা পুরনিগম আগে নিজেদের কাজ করুক, নিজেদের কাজ করার পর যদি দেখা যায় তারা সফল হলো না, তখন কেন্দ্রীয় সরকারকে টাকার জন্য অনুরোধ করা হবে।"
এদিন ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কলাকার স্ট্রিট ঘুরে দেখার পর মীনা দেবী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "আমি দুবছর ধরে দেখছি, বৃষ্টি ছাড়াও জল জমে যায়, প্রত্যেকদিন ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়ছে। বড়বাজারের মত এলাকায় জল জমে ভোগান্তিতে আছেন ব্যবসায়ীরা। সোমবার কলকাতা পুরনিগমকে চিঠি পাঠিয়ে সমস্যার সমাধান করার অনুরোধ জানানো হয়। মঙ্গলবার ইঞ্জিনিয়ারের দল পর্যবেক্ষণ করে দেখেন, বড়বাজার এলাকায় ড্রেনের মধ্যে জমে আছে প্লাস্টিক ও কাদা। যার ফলে জল ওভারফ্লো করছে। বৃষ্টি ছাড়াই সকাল সাতটা থেকে রাত দশটা অবধি জমা থাকছে জল।"
অন্যদিকে, সামান্য বৃষ্টিতেই প্রত্যেক বছরই জলমগ্ন হয়ে পড়ে শহরের বিধান সরণীতে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি এলাকা। বহুবছর ধরেই এই সমস্যায় ভুগছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে এলাকা পরিদর্শনে আসেন তৃণমূল বিধায়ক স্মিতা বক্সী। ড্রেনেজ পরিষ্কার না হওয়ায় ঘটনাস্থলেই দৃশ্যতই চটে যান তিনি। তাঁর কথায়, "যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।" তিনি আরও বলেন, "আগে যেখানে তিনদিন জল থাকত, এখন সেখানে তিন ঘণ্টা জল জমে থাকে। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যা নির্মূল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।"