Advertisment

লকডাউনে ঋণের বোঝায় জর্জরিত সোনাগাছির যৌন কর্মীরা

কার্যত তিলে তিলে শেষ হওয়ার উপক্রম হয়েছে এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ নিষিদ্ধপল্লির ৮৯ শতাংশ বাসিন্দারই। সম্প্রতি একটি সমীক্ষাই এই তথ্য উঠে এসেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

লকডাউন কাটলেও আঁধারেই সোনাগাছি।

লকডাউনের জের। ঋণভারে জর্জরিত হয়ে গভীর সমস্যায় সোনাগাছির মেয়েরা। পেশা থেকে পরিত্রাণেরও কোনও উপায় নেই। তাই কার্যত তিলে তিলে শেষ হওয়ার উপক্রম হয়েছে এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ নিষিদ্ধপল্লির ৮৯ শতাংশ বাসিন্দারই। সম্প্রতি একটি সমীক্ষাই এই তথ্য উঠে এসেছে।

Advertisment

করোনা সংক্রমণ রুখতে দীর্ঘ দু'মাসের বেশি সময় ধরে কঠোর লকডাউন লাগু ছিল। সেই সময় বন্ধ ছিল ব্যবসা। জীবন জীবিকার তাগিদেই তাই ধার করতে হয়েছে সোনাগাছির মেয়েদের। আর এতেই বেড়েছে বিপদ। বর্তমানে কাজ তেমন নেই, ফলে আয় হচ্ছে নগন্য। যা থেকে পেট চালিয়ে ঋণ মেটানোর ক্ষমতা নেই বেশিরভাগেরই।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের করা সমীক্ষা দেখা গিয়েছে, লকডাউন পরবর্তী সময়ে সোনাগাছির ৭৩ শতাংশ য়ৌন কর্মীই এই পেশা থেকে মুক্তি চাইছেন। আয়ের নতুন পথের সন্ধানে তাঁরা। কিন্তু, বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ঋণভার। সমীক্ষার ফলে উল্লেখ, 'মহামারীতে সোনাগাছির ৮৯ শতাংশ বাসিন্দাই গভীর ঋণে নিমজ্জিত। সোনাগাছির ৮১ শতাংশ যৈন কর্মীই ঋণ নিয়েছেন অসংগঠিত ক্ষেত্র থেকে (স্থানীয় ঋণদাতা, পতিতালয়ের মালিক, দালাল)। যার দরুন শোষণের ঝুঁকি বেড়েছে। ৭৩ শতাংশ মেয়ে এই কাজ ছাড়তে চাইলেও তাই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রবল ঋণভার।'

সোনাগাছিতে প্রায় ৭ হাজার আবাসিক যৌন কর্মী রয়েছেন। মহামারী আবহে গত মার্চ থেকেই তাঁদের কাজ সংম্পূর্ণ বন্ধ। আয়ের উপায় নেই। জুলাই থেকে এই এলাকার প্রায় ৬৫ শতাংশ ব্যবসা চালু হলেও কোরানা সংক্রমণের ভয়ে খদ্দেরের দেখা নেই। সোনাগাছির প্রায় ৯৮ শতাংশ যৌন কর্মীর উপর সমীক্ষা চালিয়ে এই তথ্য উঠে আসছে।

পাচার বিরোধী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যুব সভাপতি তপন সাহার কথায়, 'প্রচুর ঋণ হয়ে গিয়েছে। ফলে যৌন কর্মীরা চাইলেও এই পেশা বা এলাকা ছাড়তে পারছেন না। সংক্রমণের ভয়ে খদ্দেরও নেই। এই অবস্থায় সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার বিকল্প আয়ের উৎস নিয়ে এগিয়ে না এলে বড় বিপদ।'

মেয়েদের এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন যৌন কর্মীদের সংগঠন দুর্বার। সংস্থার এর আধিকারিকের কথায়, 'সমবায় ব্যাংক থাকলেও এখানকার সব যৌন কর্মীরাই তার অংশ নন। এছাড়া, মেয়েরা নথি সংক্রান্ত সমস্যা দূরে ঠেলতে অসংগঠিত ক্ষেত্র থেকেই অর্থ ধার করতে আগ্রাহী হয়ে থাকে। যার ফলে সমস্যা দিনকে দিন বেড়েই যায়।'

এই বিষয়ে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই ধরণের সমীক্ষা নিয়ে তিনি অবগত নন। লকডাউনে সোনাগাছি সহ সব নিষিদ্ধপল্লির মেয়েদেরই রাজ্য সরকার বিনামূল্যে রেশন থেকে সম্ভাব্য সব ধরণের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল বলেও স্মরণ করিয়ে দেন মন্ত্রী। শশী পাঁজার আশ্বাস, 'যৌন কর্মীরা আমাদের লিখিত আকারে সমস্যার কথা জানালে আমরা প্রয়োজনীয় সহায়তা করব।'

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

corona Sonagachi Lockdown
Advertisment