মহামারীর কোপে শিক্ষা৷ দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ স্কুল, কলেজ-সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি৷ অনলাইনেই চলছে পড়াশোনা৷ তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে গরিব পারিবারগুলির পড়ুয়ারা৷ ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার সামর্থ্যই নেই বহু পরিবারের৷ করোনাকালে অনেরেই তাই পড়াশোনা লাটে উঠেছে৷ এই সমস্যার কথা চিন্তা করেই রাস্তায়, ফুটপাতে ক্লাসের ব্যবস্থা ছাত্র সংগঠন এসফআইয়ের৷ শুধু প্রথাগত পড়াশোনাই নয়। তার বাইরেও নানা বিষয় নিয়ে শিক্ষকরা সচেতন করছেন ছাত্র-ছাত্রীদের।
রাস্তাতেই প্রায় এক হাজার ক্লাস, রাস্তাতেই স্কুল! প্রথাগত শিক্ষার বাইরে গিয়েও পড়ুয়াদের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও অবহিত করা হচ্ছে৷ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় এভাবেই অস্থায়ী পড়াশোনার ব্যবস্থা ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের৷ করোনার জেরে চলতি বছরে পরীক্ষা ছাড়াই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ১০০ শতাংশ পড়ুয়া পাশ করেছেন৷ মাদ্রাসা ও হাই মাদ্রাসাতেও সবাই পাশ৷ অতিমারীর জেরে বর্তমানে অনলাইনই ভরসা খুদে পড়ুয়া থেকে শুরু করে বড়দের৷ তবে এক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছে গরিব পরিবারগুলির বাচ্চারা৷ তাদের কথা ভেবেই নয়া উদ্যোগ এসএফআইয়ের৷
আরও পড়ুন- ‘নিজভূমে রাষ্ট্রহীন কামতাপুরীরা’, ফের বঞ্চনার অভিযোগে সরব জীবন সিংহ
ইতিমধ্যেই প্রায় রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় এভাবেই রাস্তার ধারে নিয়মিত পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ যে পড়ুয়ারা স্কুলের অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারছে না বা যাঁদের বর্তমান পরিস্থিতিতে পড়াশোনার ক্ষেত্রে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তারাই যাচ্ছে এসএফআইয়ের ওই ক্লাসে৷ প্রথাগত পড়াশোনার বাইরেও নানা বিষয় নিয়ে শিক্ষকরা সচেতন করছেন ছাত্র-ছাত্রীদের। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, "কলকাতা-সহ বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে রাস্তার ধারে ক্লাস নেওয়া চলছে। উচ্চশিক্ষায় যুক্ত ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকরা ক্লাস নিচ্ছেন। এলাকাভিত্তিক ছোট বাচ্চা থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস করছেন। ফিজিক্স, ইংরেজি, কেমিস্ট্রি-সহ শুধু প্রথাগত পড়াশোনা তো চলছেই, এছাড়াও পরিবেশের সংকট, অর্থনৈতিক সংকট, নারী-পুরুষের বৈষম্য নিয়েও আলোচনা চলছে ক্লাসগুলিতে৷
দুর্গাপুজোর পর এরাজ্যে স্কুল খোলার সম্ভাবনার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে অবশ্য আশ্বস্ত হতে পারেনি বামপন্থী এই ছাত্র সংগঠন। সৃজন আরও বলেন, "পুজোর পরে স্কুল-কলেজ খোলার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।ছাত্র সংগঠন, শিক্ষাবিদদের নিয়ে রাজ্য সরকার কমিটি গঠন করুক। ছাত্র-ছাত্রীদের টিকাকরণের ব্যবস্থাও করা হোক। অনলাইন পড়াশোনা চললেও একটি বড় অংশের পড়ুয়ারা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তা মেনে নেওয়া যায় না।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন