রাত বাড়লেই জমজমাট হয়ে ওঠে শহরের এই এলাকা। তবে, গত কয়েকদিন ধরেই সেই চেনা ছবি উধাও। ফাঁকা ভারতের সর্ববৃহৎ যৌনপল্লি সোনাগাছি। সৌজন্যে করোনা আতঙ্ক।
খদ্দেরের সংখ্যা কমেছে চোখে পড়ার মত। মাথায় হাত যৌনকর্মীদের। সংখ্যার হিসাব বলছে, করোনা সংকটের পর থেকে প্রায় ৫০ শতাংশ খদ্দেরের আনাগোনা কমেছে। একই ছবি, শহরের অন্যসব যৌনপল্লি কলকাতার বউবাজার, কালীঘাট, খিদিরপুরেও। অন্যথা হয়নি ডোমজুর, কালনা, উলুবেড়িয়া, শ্যাওরাফুলি, শান্তিপুর, দিনহাটার যৌনপল্লিতে। যৌনকর্মীদের কথায়, অনেকেই বলছেন নোট বাতিল পর্বে ধাক্কা খেয়েছিল ব্যবসা। কিন্তু, এই ধারা আর কয়েকদিন চলতে থাকলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হবে।
যৌনকর্মীদের সংগঠন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য় ও উপদেষ্টা স্মরজিৎ জানা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'ভয়ঙ্করভাবে কমেছে খদ্দেরের সংখ্যা। সাধারণত প্রত্যেকদিন প্রায় বারো হাজার মানুষ সোনাগাছিতে আসেন। গত তিন-চার দিন ধরে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ-ছয় হাজারে। ফলে, কাজ কমছে মেয়েদের। টান পড়ছে পকেটে।'
আরও পড়ুন: দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাস ছড়ানোর পিছনে কেন দায়ী করা হচ্ছে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীকে?
সোনাগাছিতে বর্তমানে প্রায় সাত হাজার বসবাসকারী যৌনকর্মী রয়েছেন। প্রত্যেক দিন প্রায় আরও তিন হাজার মহিলা আসেন এই কাজের জন্য। মারণ ভাইরাসের কাঁপুনিতে সবাই বিপদে। দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে এক যৌনকর্মীর বলেন, 'যৌন আনন্দ দিয়েই আমাদের পেট চলে। এই পরিস্থিতিতে হাতে টাকা আসছে না। কীভাবে পেট চলবে তা ভেবে পাচ্ছি না।' একই দাবি সোনাগাছির অন্য এক মহিলার। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, 'অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। করোনা আতঙ্কে কেই এই এলাকা মুখো হচ্ছেন না। আগে প্রত্যহ অন্তত চারটে খদ্দের পেতাম। গত তিন-চারদিন ধরে কাজই নেই।'
এই পরিস্থিতিতে যৌননকর্মীদের সচেতন করতে উদ্যোগী দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি। স্মরজিৎ জানা জানিয়েছেন যে, 'স্বাস্থ্য প্রশিক্ষকরা যৌনপল্লিতে গিয়ে মহিলাদের সচেতন করে তোলার কাজ করছেন। সর্দি-জ্বর রয়েছে এমন খদ্দেরদের বাতিলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোন খদ্দেরকে গ্রহণ করা উচিত তা বোঝানো হচ্ছে। আতঙ্কিত না হয়ে করোনা মোকাবিলায় সতর্ক হওয়ার কথা মহিলাদের বলা হচ্ছে।'
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন