স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের সদর দফতর নিউ কয়লাঘাট ভবনে সোমবার রাতের বিধ্বংসী আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এঁদের মধ্যে রেলের ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার পার্থসারথী মণ্ডল-সহ দমকলের চার কর্মী, পুলিশের এক আধিকারিক এবং একজন আরপিএফের আধিকারিকও রয়েছেন। সোমবার রাত একটা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে সবকটি দেহ এসে পৌঁছায় ময়নাতদন্তের জন্য। হাসপাতালে কয়েকজনের পরিবারের সদস্যও আসেন। পার্থসারথী মণ্ডলের দেহ শনাক্ত করেন তাঁর মেয়ে ও জামাই।
এদিন রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্ধারকাজ খতিয়ে দেখেন দমকল ও পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে। ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও। মমতা বলেন, "রেলের অনেক পুরনো ভবন। ভয়াবহ দুর্ঘটনা। আগুন নেভাতে আসা সাত জনের দেহ পাওয়া গিয়েছে, দুজন মিসিং। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এখনও দু’জনের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন। তাঁরা লিফটে করে উঠতে গিয়েছিলেন। সেখানেই আগুন বিদ্যুতের ঝলকের মতো পুড়িয়ে দিয়েছে। খুবই দুঃখজনক। মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপুরণ ছাড়াও পরিবারের এক জনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। সকলেই খুব লড়াই করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।"
এই দুর্ঘটনায় রেলের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘আগুন লাগার পর পরই ‘কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ের নকশা দেওয়ার জন্য দমকল ও পুলিশের তরফে রেলকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু ওরা (রেল) সেসব দিতে পারেনি। এমনকী পুরোটাই রেলের অফিস হওয়া সত্ত্বেও রেলের কোনও আধিকারিক এখানে আসেননি।’ রেলের দফতরে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কী অবস্থায় ছিল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আহতদের দ্রুত সুস্থ কামনা করেছেন মোদী। সেইসঙ্গে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।