শহরে প্রধানমন্ত্রী। বিরোধিতায় পড়ুয়ারা। শনিবারের মত এদিনও সকলা থেকেই হাতে প্ল্যাকার্ড, স্লোগান দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে আসার প্রতিবাদ করছেন বাম ছাত্র-যুবরা। ডোরিনা ক্রসিং-এ শনিবার রাতে ধর্না বসেন বহু প্রতিবাদী। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, সর্বত্রই মোদী বিরোধিতায় পথে নামেন পড়ুয়াদের একাংশ। দেশভাগের চক্রান্ত করেছে মোদী সরকার। ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে সিএএ। তারই বিরোধিতায় চলছে ধর্না-বিক্ষোভ কর্মসূচি।
ডোরিনা ক্রসিংয়ে ধর্নায় প্রতিবাদীরা।
এদিন বেলুড় মঠ থেকে জল পথে নেতাজি ইন্ডোরে যান প্রধানমন্ত্রী। মোদীর প্রবেশের সময় কালো পতাকা হাতে এক দল বিক্ষোভকারী প্রতিবাদ স্লোগান দিতে থাকেন। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। একর আগে ফরওয়ার্ড বল্কের বেশ কিছু সমর্থক পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পোর্ট ইউলিয়ামে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ বাধা দিলে সাময়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে ডোরিনা ক্রসিংয়েই ধর্নায় বসে পড়েন প্রতিবাদীরা।
প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা সফরের বিরোধিতায় পড়ুয়াদের বিক্ষোভ ঘিরে শনিবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং চত্বর। পড়ুয়াদের মিছিল আটকাতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় পুলিশকে। পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের একাংশের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। পুলিশ-পড়ুয়া ধস্তাধস্তি বেধে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘মাথা গরম করবে না। শান্ত হও’’। এরপরই বন্দেমাতরম স্লোগান দেন মমতা। এদিন বিক্ষোভের আবহেই কলকাতায় পৌঁছোন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিমানবন্দরে ফুল দিয়ে মোদীকে স্বাগত জানান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বিামনবন্দরে ছিলেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়রা। এদিন রাজভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠক শেষে মমতা বলেন, ‘‘সিএএ,এনআরসি নিয়ে আপনারা ভাবুন ফের। আমি বলেছি, সিএএ-এনআরসি বাতিল করা হোক’’।
কলকাতায় মোদী, চলছে প্রতিবাদ। ছবি: শশী ঘোষ।
প্রতিবাদের মাঝেই বেলুড় মঠ থেকে সিএএ-এর পক্ষে সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। নাম না করে বিরোধীদের তুলধোনা করে মোদী বলেন, 'সিএএ নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ায় জন্য নয়, নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।’ বিরোধীদের নিশানা করে পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যা পড়ুয়া, যুব সম্প্রদায় বুঝতে পারছেন তা অনেক প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ইচ্ছে করেই বুঝতে পারছেন না। অনেকেই সিএএ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। যুব সমাজই ভারত নির্মাণের ভরসা। অনেক তরুণ সিএএ নিয়ে ভুল বুঝলেও তাদের সঠিকটা বোঝাতে হবে। এটা আমাদেরই কর্তৃব্য। ‘ তাঁর কথায় সমস্যা দীর্ঘ দিন ফেলে রাখতে নেই। ‘ভারত সরকার এই আইনের উদ্যোগ নিয়েছে বলেই পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কী ব্যবহার করা হয় তা স্পষ্ট হয়েছে।’'