মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়াই সার। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরাল খোদ কলকাতার বাঘাযতীনের একটি নার্সিংহোম। চরম হয়রানির শিকার রোগীর পরিবার। শেষ পর্যন্ত চড়া সুদে মহাজনের থেকে টাকা ধার করে নার্সিংহোমে বিল মেটাতে হল রোগীর পরিবারকে।
রাজ্যের প্রতিটি পরিবারকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার উদ্যোগ যে অভাবনীয় এবং তা মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের থেকে মাঝে মধ্যেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নাকচের অভিযোগ আসছে।
কী অভিযোগ?
গত ১২ জানুয়ারি পেটে অসহ্য ব্যাথা হওয়ায় শিখা রানি সেনকে তাঁর ছেলে কানু সেন বাঘাযতীনের রেড প্লাস নার্সিংহোমে ভর্তি করেন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের উপর ভরসা করেই দ্রুত চিকিৎসার আশায় শিখাদেবীকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সেন পরিবারের কাছে বৈধ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও তার বিনিময়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে অস্বীকার করে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।
শেষ পর্যন্ত এখনও পর্যন্ত বিল বাবদ হওয়া ২২ হাজার টাকা মহাজনের কাছ থেকে ১০ শতাংশ হারে সুদে ঋণ নিয়ে মিটাতে হয়েছে আর্থিকভাবে দুস্থ শিখা রানি সেনের ছেলে কানু সেনকে।
কী বলছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ?
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানো অভিযোগ উঠতেই বাঘাযতীনের রেড প্লাস নার্সিংহোমের তরফেজানানো হয়, সরকার থেকে স্বাস্থ্যসাথী বাবদ মাত্র ৭৫০ টাকা বরাদ্দ করেছে। ওই অর্থে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
এরপরই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানান, রোগী ভর্তির আগে নয়, পরে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখানো হয়েছে। তাই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখানো হলে আমরা টাকা ফেরত দিয়ে দিচ্ছি। জানা গিয়েছে নার্সিংহোমের তরফে ১২ হাজার টাকা রোগীর পরিবারকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবারই রাণাঘাটে মুখ্যমন্ত্রী বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে কাউকে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। তিনি বলেছিলেন, ‘অনেক বড় বড় হাসপাতাল রয়েছে যারা বলছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চলবে না। তাদের বলছি এই কার্ড চালাতে হবে, পরিষেবা দিতে হবে। মনে রাখবেন বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের রয়েছে। যদি কোনও নার্সিংহোম স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে পরিষেবা দিতে অস্বীকার করে তবে একটা এফআইআর করবেন। তারপর সরকার বুঝে নেবে।’
তাহলে কেন মাঝে মধ্যেই নার্সিংহোমগুলোর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানোর অভিযোগ উঠছে? এদিনের ঘটনার পর ফের তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন