শোচনীয় টালা ব্রিজের অবস্থা। প্রশাসনের নির্দেশে পুজোর আগে থেকেই ওই ব্রিজ দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ। ঘুরপথে চলছে কলকাতা ও উত্তর শহরতলীর মধ্যে চলাচলকারী বহু বাস। এতেই বেড়েছে সমস্যা। ঘুর পথে যেতে হওয়ায় একদিকে যেমন কমেছে যাত্রী সংখ্যা, তেমনই বেড়েছে জ্বালানীর খরচ। ফলে কলকাতা থেকে উত্তর ২৪ পরগণার মধ্যে যোগাযোগ রক্ষাকারী বহু রুটের বাস চলাচল বন্ধের পথে। দিনের পর দিন লোকসান করে বাস চালানো অসম্ভব বলে দাবি বাস মালিক সংগঠনের।
কলকাতা ও উত্তর শহরতলির মধ্যে ৯টি রুটের বাস টালা ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল করত। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৩৪বি (ডানলপ-এসপ্ল্যানেড), ৩৪সি (নোয়াপাড়া-এসপ্ল্যানেড), ৭৮ (ব্যারাকপুর-এসপ্ল্যানেড), ২০১ (নিমতা-নিক্কো পার্ক), ২১৪ (সাজিরহাট-বাবুঘাট), ২২২ (বনহুগলি-বেহালা), ৩২এ (দক্ষিণেশ্বর-সেক্টর ফাইভ), ২০২ (নাগেরবাজার-সায়েন্স সিটি), এস-১৮৫ (নিমতা-হাওড়া)। আর্থিক ক্ষতির জেরে গত সোমবার থেকেই এইসব রুটের অধিকাংশ বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে নাজেহাল অবস্থা যাত্রীদের।
আরও পড়ুন: জিয়াগঞ্জকাণ্ডে অভিযুক্তের পক্ষে দাঁড়ালেন না কোনও আইনজীবী
বেহাল টালা ব্রিজের অবস্থা খতিয়ে দেখতে পুজোর আগেই ব্রিজ পরিদর্শন করেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সময়ই তাঁরা ব্রিজের ভার লাঘবের পরামর্শ দেন। প্রশাসন তারপর থেকেই ওই ব্রিজ দিয়ে ৩টনের বেশি ওজনের যান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। ফলে পণ্যবাহী গাড়ির সঙ্গেই অর্ধশতাব্দী প্রাচীন টালা ব্রিজ দিয়ে বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। কলকাতা পুলিশের তরফে বিকল্প পথের ব্যবস্থা করা হয়। বাস মালিকদের দাবি, ঘুরপথে জ্বালানী খরচ প্রত্যেকদিন প্রায় ৫০০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। এইভাবে লোকসান করে বাস চালানো অসম্ভব।
আরও পড়ুন: সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সংগঠনে জোর বিজেপির
এই নয়টি রুটের বাস মালিকরা তাঁদের সমস্যার কথা ইতিমধ্যেই জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটকে জানিয়েছেন। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "যা অবস্থা তাতে ওই রুটে জ্বালানীর খরচও উঠছে না। প্রত্যেকদিন ডিজেলের খরচ ৫০০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। এটা সত্যিই সমস্যার।" সমস্যা সমাধানে তিনি সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
পুজোর মধ্যেই টালা ব্রিজ পরিদর্শন করে যান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা ৫৭ বছরের পুরোনো এই ব্রিজ ভেঙে ফেলার সুপারিশ করেন রাজ্যের কাছে। অবিলম্বে হাল্কা যান চলাচলও ওই ব্রিজ দিয়ে বন্ধ করা উচিত বলে রিপোর্টে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ দল। তবে, টালা ব্রিজের ভবিষ্যত কী তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় নি।
Read the full story in English