রাজ্যে আরও এক করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলল। এই নিয়ে বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল তিন। জানা গিয়েছে রাজ্যের তৃতীয় করোনা আক্রান্ত উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার বাসিন্দা এক ছাত্রী। দিন কয়েক আগেই স্কটল্যান্ড থেকে তিনি রাজ্যে ফিরেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবারই তাঁর নমুনা পরীক্ষা হয়। নাইসেড থেকে রাতেই আসে রিপোর্ট। যাতে ধরা পড়ে হাবড়ার বাসিন্দার শরীরে রয়েছে করোনার জীবাণু।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে যে, করোনার উপসর্গ থাকায় স্থানীয় হাসপাতাল থেকে ওই ছাত্রীকে বেলেঘাটা আইডি-তে রেফার করা হয়েছিল। শুক্রবার দুপুরে ওই রোগী আইডি-তে ভর্তি হন। রাতেই তাঁর শরীরে কোভিড-১৯ পজেটিভ ধরা পড়ে।
বর্তামানে রাজ্যের তৃতীয় করোনা আক্রান্ত রোগী বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্পেশাল আইসোলেশন ওয়ার্ডে তাঁকে রাখা হয়েছে। স্কটল্যান্ড থেকে ফেরার পর পরিবারের সদস্যরা ছাড়া ওই ছাত্রীর সঙ্গে কারা মেলামেশা করেছেন তার খোঁজখবর শুরু হয়েছে। ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গতকালই কলকাতার বালিগঞ্জে এক যুবকের দেহে করোনার জীবাণু মিলেছিল। রাজ্যে প্রথম করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যায় গত মঙ্গলবার। এরা দু'জনেই লন্ডন থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। বাংলার প্রথম করোনা আক্রান্ত তরুণের শারীরিক আবস্থা স্থিতিশীল বলে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে আক্রান্ত ২৩৬, সুস্থ ২৩, স্বেচ্ছা কোয়ারান্টাইনে ডেরেক ও’ব্রায়েন
করোনা মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই নবান্ন থেকে জারি হয়েছে কড়া বার্তা – বিদেশ থেকে আগত কোনও শহরবাসী যদি স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে না যান, তবে তাঁকে জোর করেই গৃহবন্দী করে রাখা হবে। এই মর্মে নিচের সতর্কবার্তা নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে পোস্ট করেছে কলকাতা পুলিশ। পোস্টে লেখা রয়েছে: “এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে যেসব করোনা আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গেছে। তাঁরা বিদেশে থাকাকালীন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং কলকাতায় সেই সংক্রমণ বহন করে এনেছেন। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, বিগত কিছুদিনের মধ্যে যাঁরা অন্যান্য দেশ থেকে এ-রাজ্যে এসেছেন, বিশেষ করে ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি থেকে, তাঁরা যেন অবশ্যই বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন ‘হোম কোয়ারান্টাইনে’, অর্থাৎ গৃহবন্দি অবস্থায় থাকেন। করোনা-প্রতিরোধের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এখন অবশ্যকর্তব্য। যিনি বা যাঁরা এই নির্দেশ অমান্য করবেন, তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবে রাজ্য সরকার। প্রয়োজনে ‘ ওয়েস্ট বেঙ্গল এপিডেমিক ডিজিজ কোভিড১৯ রেগুলেশন ২০২০’ অনুসারে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের বলপূর্বক ‘কোয়ারান্টাইন’ অর্থাৎ গৃহবন্দি থাকতেও বাধ্য করা হবে।”
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় তৎপর রাজ্য সরকার। মারণ ভারাসের প্রকোপ রুখতে হাসপাতালে শষ্যা সংখ্যা বৃদ্ধি, কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র তৈরি থেকে মাস্ক বিতরণ, বাজারহাট খোলা রাখা সহ ইতিমধ্যেই একাধিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করেছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, 'আতঙ্কিত না হয়ে সবাই একযোগে সতর্কতা অবলম্বনের মধ্যে দিয়েই করোনা মোকাবিলা সম্ভব।' দেশের বাইরে থেকে যাঁরা রাজ্যে আসছেন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে তাঁদের স্বেচ্ছা গৃহ কোয়ারেন্টাইনে থাকার আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।