ডিম-ভাত ছিল, তবে তাকে টেক্কা দিল মাংস-ভাত এবং বিরিয়ানি।
তৃণমূলের শহিদ দিবসের কর্মসূচির কয়েকদিন আগে থেকেই সোস্যাল মিডিয়া সরগরম। প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলির অন্যতম সভায় যোগ দিতে আসা কর্মীদের খাওয়াদাওয়ার মেনু। গত বছর শহিদ দিবসের আগে তৃণমূলের একটি দেওয়াল লিখনের ছবি ভাইরাল হয়ে যায়, যেখানে লেখা ছিল, 'মেনু- ডিম-ভাত'। তারপর থেকেই নেট-দুনিয়ায় নিয়মিত চর্চা শুরু হয় ডিম-ভাত নিয়ে। বিরোধী বামপন্থী ও বিজেপি সমর্থকেরা কটাক্ষ করেন, ডিম-ভাতের লোভ দেখিয়েই নাকি গ্রাম থেকে মানুষদের নিয়ে আসা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায়। তৃণমূল সমর্থকদের পাল্টা যুক্তি, দূরদূরান্ত থেকে আসা গরিব মানুষ কি দিনভর না খেয়ে থাকবেন! ডিম-ভাত আয়োজনের খরচ কম, তাই বহুক্ষেত্রেই কর্মী-সমর্থকদের জন্য ওই খাবারের ব্যবস্থাই করা হয়।
রবিবার দিনভর ধর্মতলার আশেপাশে চক্কর কাটার পর অবশ্য দেখা গেল, পছন্দের তালিকায় ডিম-ভাত এবার কার্যত তিন নম্বরে। তৃণমূলকর্মীরা সবচেয়ে বেশি খেয়েছেন মাংস-ভাত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মুরগীর মাংস। এরপর রয়েছে প্যাকেটভর্তি বিরিয়ানি। সবশেষে ডিমের ঝোল-ভাত। কলকাতা এবং আশেপাশের জেলা থেকে আসা কর্মীরা নিজেদের জন্য ফুড প্যাকেট এনেছিলেন। তাতে বিরিয়ানি ছিল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। দূর থেকে আসা কর্মীরা রান্নার আয়োজন করেছিলেন শহরেরই আনাচে-কানাচে।
আরও পড়ুন, একুশে জুলাই নিয়ে দিলীপ ঘোষের হুঙ্কার! থানায় এফআইআর তৃণমূলের
সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের বিভিন্ন জায়গায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিল বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাস। তৃণমূল কর্মীরা ফুটপাথের বিভিন্ন জায়গায় রান্না করছিলেন। বর্ধামান থেকে আসা পঞ্চায়েতের সদস্য মালতী সাহার কথায়, "আগেরবার খাসির মাংসের ব্যবস্থা করতে পেরেছিলাম। এবার দলের টাকা কম। তাই মুরগীর মাংস আনা হয়েছে।" বীরভূমের লাভপুরের তৃণমূল কর্মী তারক দাসেরা জানান, "দল নির্দেশ দিয়েছে যথাসম্ভব কম খরচে গোটাটা ব্যবস্থা করার। তাই ডিম-ভাতের আয়োজন করেছি। এবার বাসভাড়ার জন্য পর্যাপ্ত টাকাও মেলেনি।"
উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া-জগদ্দল এলাকা সাম্প্রতিক অতীতে বারবার শিরোনামে এসেছে বিজেপি-তৃণমূলের সংঘর্যের কারণে। সেখান থেকে এসেছিলেন জগদ্দলের অ্যালায়েন্স জুটমিলের কর্মী রাজু আলম। তিনি বলেন, "অর্জুন সিং-এর সঙ্গে লড়াই করছি আমরা। অনেক হুমকি শুনেও দিদির সভায় এসেছি। মজুরলাইনের যারা এসেছে, তাদের বিরিয়ানির প্যাকেট দিয়েছে দল।"
কলকাতার এই তৃণমূল কাউন্সিলর বলেন, "সাধারণত দূর-দূরান্ত থেকে গরীব মানুষেরা উৎসবের মেডাজে আসেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁদের জন্য সামান্য মাংসের ব্যবস্থা করা হয়। এবারও সবচেয়ে বেশি মাংস-ভাতের আয়োজনই হয়েছে। তবে সব জেলার তো সামর্থ্য সমান নয়। তাই অনেকে ডিম-ভাতের আয়োজনই করতে পেরেছেন।"