ভুয়ো আইএএস পরিচয় দিয়ে কসবায় ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্প। পুলিশের জালে অভিযুক্ত। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই ক্যাম্প থেকেও দু’দিন আগেই টিকা নিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। জানা গিয়েছে, খানিকটা সাংসদের উদ্যোগেই এই প্রতারণা চক্র ফাঁস করেছে কলকাতা পুরসভা এবং কসবা থানার পুলিশ।পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাঞ্জন দেব নামে ওই প্রতারক নিজেকে পুরসভার যুগ্ম কমিশনার আখ্যা দিয়ে টিকাকরণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। জাল করেন সরকারি নথিও। এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এই টিকাকরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছিল স্থানীয় সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে। মূলত তৃতীয় লিঙ্গ, রূপান্তরকামী, বিশেষভাবে সক্ষম এবং দুঃস্থ নাগরিকদের টিকাদানে এই উদ্যোগ ছিল। তাই স্থানীয় সাংসদকে ব্যবহার করে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন আয়োজকরা।
তদন্তে জানা গিয়েছে, স্থানীয় থানা কিংবা পুরসভার অনুমতি নেয়নি প্রতারকরা। এমনকি বেআইনি ভাবে ব্যবহার করা হয় ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে। কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘পুরসভার কেউ এই ঘটনায় জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হবে। অনেকেই ভুয়ো সিবিআই অফিসার, ভুয়ো সরকারি অফসার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে থাকে। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত করবে।‘
এদিকে এই প্রতারণা প্রসঙ্গ সংবাদমাধ্যমকে মিমি চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল তৃতীয় লিঙ্গ, রূপান্তরকামী, বিসেশভাবে অক্ষম এবং দুঃস্থদের জন্য এই টিকাকরণ। আমি তাই ওদের সচেতন করতে এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করি। নিজে প্রথম টিকা নিই। কিন্তু আমার সন্দেহ হয় মোবাইলে কোনও মেসেজ না আসায়। আমি উদ্যোক্তাদের একজনকে প্রশ্ন করি মেসেজের ব্যাপারে, সে বলে ম্যাডাম আপনি বাড়ি যেতে যেতেই সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন। এরপরেও সার্টিফিকেট না আসায় আমার কয়েকজন ছেলেকে ওদের কাছে পাঠাই। তখন আবার বলে দুই-তিন দিনের মধ্যে সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন। তাতেই আমার সন্দেহ হয়। এমনকি কোউইন অ্যাপেও ভ্যাক্সিনেশন নথিভুক্ত হয়নি। তখনই আমি পুলিশের দ্বারস্থ হই।‘
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ভ্যাকসিন নিলেই মোবাইলে সব তথ্য চলে আসে। কোউইনে ঢুকে পড়ে প্রাথমিক নথি। এই ক্ষেত্রেও কিছুই হয়নি। এমনকি শুধু সাংসদ মিমি চক্রবর্তী নয় সেই কেন্দ্র থেকেই টিকা নেওয়া কেউই সার্টিফিকেট বা কোউইনে প্রাথমিক নথি পায়নি। তাতেই বাড়ে আরও সন্দেহ।
এদিকে, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে ব্যাঙ্কের নীচের তলে গত ১০ দিন ধরে এই কীর্তি চালাচ্ছিল মূল অভিযুক্ত। সেখান থেকেই পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে দেবাঞ্জনের ভুয়ো পরিচয়পত্র, নীলবাতি লাগানো গাড়ি এবং কলকাতা পুরসভার একটি স্টিকারও।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন