সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগের জন্য ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগেই তৃনমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে চালু করা হয়েছিল 'দিদি কে বলো' কর্মসূচী। এর ব্যপক সাফল্যের পরে আগামী ৫ মে থেকে ফের একবার চালু হতে চলেছে 'দিদি কে বলো'। মার্চের শেষ সপ্তাহে উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে শিলিগুড়িতে এই কর্মসূচি সম্পর্কে আগাম আভাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৯ এর লোকসভা ভোটের আগে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে অভিযোগ জানানোর জন্য চালু হয়েছিল “দিদিকে বলো”। সেই প্রকল্পটি যথেষ্ট জনপ্রিয়তাও লাভ করে। মূলত সরকারি কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ কিংবা শাসকদলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ জানানো যেত একটি নির্দিষ্ট ফোন নম্বরে। সেই দিদিকে বলো-এর দ্বিতীয় দফা নিয়ে প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। তিনটি ধাপে এই কর্মসূচি রূপায়ণের পরিকল্পনা করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
প্রথম বার এই কর্মসূচি পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্ব ছিল প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের উপর। তবে এখনো পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে এ বার হয়তো কর্মসূচি পরিচালনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব থাকবে তৃণমূল নেতৃত্বের হাতেই। আনুষ্ঠানিক ভাবে এই কর্মসূচির ঘোষণা করবেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। রবিবার দলের শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে কর্মসূচি শুরুর ব্যাপারে মিলেছে সবুজ সংকেত। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস এবং ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সী এবং দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: সংক্রমণ কমলেও উদ্বেগ যাচ্ছে না, দেশে করোনা অ্যাক্টিভ কেস সাড়ে ১৬ হাজার পার
‘দিদি কে বলো’ হেল্পলাইনের মাধ্যমে যারা রাজনৈতিক নেতা ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে না বলেও দলের তরফে জানানো হয়েছে। আগের বারের মতই এবারেও একটি নির্দিষ্ট নম্বরে অভিযোগ জানাতে পারবেন আম-আদমী।
উত্তরবঙ্গে তার সাম্প্রতিক সফরের সময়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেণ যে তিনি দল এবং প্রশাসন উভয়কেই স্বচ্ছ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও একাধিকবার বলেছেন যে তিনি দলে কোনও দুর্নীতি এবং কোনও সরকারী দফতরের কোন বেআইনি কাজ বরদাস্ত করবেন না। আগামী ৩ মে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন টিএমসির নতুন ভবনের আনুষ্ঠানিক সূচনার পর এই ভবন থেকেই 'দিদিকে বলো কর্মসূচি' পরিচালিত হবে বলে দলীয় সূত্রের খবর।
দলীয় সূত্রের খবর বীরভূমে বগটুই হত্যাকাণ্ড, আনিস খান হত্যাকাণ্ড, নদীয়া গণধর্ষণ কাণ্ড, তপন কান্ডুর হত্যাকান্ডের মতো সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রীতিমত চাপের মুখে রয়েছে দল। সেই সঙ্গে বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে দল জিতলেও ভোটের মার্জিন কমেছে অনেকটাই। সেই সঙ্গে বেশ কিছু দলীয় কোন্দল সামনে এসেছে। এই ধরণের কর্মসূচীকে হাতিয়ার করেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে চাইছে দল।