বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ব্যবসায়ীদের এবার অস্থায়ী দোকান গড়ে দেবে কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড। ইতিমধ্যেই ওই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ট্রেড লাইসেন্স ভেরিফিকেশন ফর্ম দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক ও স্থানীয় কাউন্সিলরও থাকতে বলা হয়েছে ভেরিফিকেশনের কাজে। জানিয়েছে কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষ।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজে বউবাজারের বিপর্যয়ের পর ঘর ছাড়া বহু পরিবার। তাদের আশ্রয় দিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে দেওয়া হয়েছে আর্থিক ক্ষতিপূরণ। ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ি ফের তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, বিপর্যস্ত বাড়িগুলিতে একাধিক সোনার দোকান সহ স্যাকরার দোকান ছিল। চলতি মাসের শুরু থেকেই যেগুলি একেবারেই বন্ধ পড়ে রয়েছে। ফলে বাড়ছে অনিশ্চয়তা। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই এবার দোকান ঘর বানিয়ে দেওয়ার কথা বলছে কেএমআরসিএল।
আরও পড়ুন: রাজীবের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আর্জি সিবিআই-এর
কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের এক আধিকারিকের কথায়, 'ভেরিফিকেশন ফর্ম দেওয়া হয়েছে ৫০টির মত। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক ও স্থানীয় কাউন্সিলর, পুলিশ প্রথমে ভেরিফিকেশন করবেন। তারপরই তাদের অস্থায়ী দোকান ব্যবস্যার জন্য় দেওয়া হবে।' কোথায় হতে চলেছে অস্থায়ী দোকানের ঠিকানা? সূত্রের খবর, মধ্য কলকাতার লিসা লেন ও বড়বাজারের সুকিয়াস লেনে দেওয়া হতে পারে অস্থায়ী দোকান।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রের কাজের জন্য চলছিল সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ। অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্য়ে এই কাজ চলে। সেই চাপই সহ্য করা সম্ভব হয়নি। ধসে যায় বউবাজারের বিস্তীর্ণ অংশের মাটি। দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাকরা পাড়া লেনে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। বেশিরভাগ বাড়িতেই ফাটল ধরে, হেলে যায় একশ বছরের পুরনো বেশ কয়েকটি বাড়ি। চারদিকে তখন আতঙ্ক। এই অবস্থায় ৩১শে আগস্ট রাতেই মেট্রো কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দাীদের অন্য়ত্র সরিয়ে দেন। দিন কয়েকের মধ্যেই একই হাল হয় মধুগুপ্ত লেনের বেশ কয়েকটি বাড়ির।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে মোদীকে শুভেচ্ছা মমতার
বউবাজার সোনার আড়ত নামে পরিচিত। বিপর্যস্ত বেশিরভাগ বাড়িতেই ছিল একাধিক সোনার দোকান ও স্যাকরার ব্য়বসা। ফাটল দেখা দেওয়ায় সেসব বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দোকান থেকে কোনও কিছুই উদ্ধার করতে পারেননি ব্যবস্য়ীরা। পুলিশ দোকানে ঢুকতে না দেওয়ায় গত পনের দিনের উপর বন্ধ ব্যবসা। পুজোর আগে কার্যত বেকার এক হাজারেরও বেশি স্বর্ণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষ। এই অবস্থায় মেট্রোর অস্থায়ী দোকান দেওয়ার ঘোষণায় করেছে। কিন্তু, তাতে কতটা সুরাহা হবে তা নিয়ে সন্দিহান ব্য়বসায়ী ও কারিগরেরা। স্যাকরা পাড়া লেনের এক স্বর্ণ ব্য়বসায়ীর কথায়, '৩১ তারিখ থেকে সব বন্ধ। জানি না এভাবে আর কতদিন চলতে হবে। বেশিরভাগ ব্যবসায়ীই সোনা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বের করতে পারিনি।'
এদিকে হাইকোর্ট এদিন নির্দেশ দেয়, বন্ধ থাকবে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ। সাত নভেম্বর পর্যন্ত মেট্রোর কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্যের কী পরিকল্পনা তা কলকাতা হাইকোর্টকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। বিপর্যয়ের পর ৭৮টি বাড়ি খালি করে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে ৮৩টি পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ হিসাবে পাঁচ লক্ষ্য টাকা পৌঁছে গিয়েছে। মেট্রো তরফে জানান হয়েছে, এই মুহূর্তে গ্রাউটিং করে বৌবাজারের মাটি শক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
Read the full story in English