সরকারি চিকিৎসকের মর্মান্তিক পরিণতি। চাকরিতে বদলির জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী মহিলা চিকিৎসক। ফেসবুকে পোস্ট করে সরকারের বদলি নীতি নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন চিকিৎসক অবন্তিকা ভট্টাচার্য। একটানা প্রায় দুসপ্তাহ হাসপাতালে জমে-মানুষে টানাটানি চলেছে। শরীরের বেশিরভাগ অংশটাই পুড়েগিয়েছিল তাঁর। শেষ রক্ষা হল না। এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু অবন্তিকা ভট্টাচার্য নামে ওই মহিলা চিকিৎসকের।
বেহালার বাসিন্দা অবন্তিকা ভট্টাচার্য। পেশায় চিকিৎসক অবন্তিকা গত ১৬ অগাস্ট নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করে চাকরিক্ষেত্রে তাঁর চরম অস্বস্তির কথা লেখেন। আট বছর জেলায় কাজ করার পরেও পদোন্নতি না দিয়েই ফের তাঁকে বদলি করায় তাঁর চূড়ান্ত মানসিক যন্ত্রণার কথা তিনি জানান। চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেই কী শান্তি মিলবে? ফেসবুকে এমনও লেখেন তিনি। এই পোস্টটি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই গায়ে আগুন দেন চিকিৎসক অবন্তিকা ভট্টাচার্য। বেহালার বাড়িতেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন অবন্তিকা। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে।
আরও পড়ুন- ফের ধাক্কা পদ্ম শিবিরে, তৃণমূলে ফিরলেন আরও এক বিধায়ক
গত দুই সপ্তাহ ধরে এসএসকেএম হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন অবন্তিকা ভট্টাচার্য নামে ওই চিকিৎসক। তবে তাঁর শরীরের ষাট শতাংশের বেশি অংশ পুড়ে গিয়েছিল। অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থায় ছিলেন তিনি। শেষমেশ চিকিৎসা চলাকালীন রবিবার রাতে অবন্তিকা ভট্টাচার্যের মৃত্যু হয়েছে। সহকর্মীর এই পরিণতিতে শোকের ছায়া রাজ্যের চিকিৎসক মহলে।
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস-এর রাজ্য সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, “হৃদয়বিদারক একটি ঘটনা। তরতাজা চিকিৎসককে চলে যেতে হল। ওঁর পরিবারের সমস্যার কথা সংশ্লিষ্ট মহল জানত। ওঁর সন্তানের কঠিন অসুখ রয়েছে। মেদিনীপুর থেকে এবার ডায়মন্ডহারবারে পাঠালে বদলি নিয়ে প্রশ্ন তো উঠবেই। এটা প্রথম নয়, বেছে বেছে চিকিৎসকদের সঙ্গে এটা করা হচ্ছে।” বদলির ক্ষেত্রে স্বজনপোষণেরও অভিযোগ তুলেছেন মানস গুমটা। অন্যদিকে, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা IMA-র রাজ্য সম্পাদক শান্তুন সেন অবন্তিকা ভট্টাচার্যের অকাল-মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন