শুধু ভারতবর্ষ বললে ভুল হবে, কলকাতার ট্রাম কিন্তু জগদ্বিখ্যাত! এই বিষয়ে কোনও সঙ্কোচ নেই। যারা একটু সময় নিয়ে রাস্তায় বেরোন, টুংটাং বেলের শব্দ মাঝরাস্তায় লাইনের আওয়াজে যেন এক অন্য অনুভূতি। তবে ট্রামে চড়ার ইচ্ছে থাকলেও সময়ের কারণে অনেকেই এর সঙ্গে যাত্রাপথ উপভোগ করতে পারেন না, দেরি হয়ে গেলে যে খুব মুশকিল! তাছাড়াও মহানগরীর রাজপথে ট্রাম এখন লুপ্তপ্রায়, খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু সপ্তাহ শেষে হোক কিংবা কাজের ফাঁকে গন্তব্য যদি ট্রাম রেস্তরাঁ হয়, তাহলে নিশ্চয়ই মন্দ হয় না?
ইকো পার্কে কলকাতার সেরার সেরা স্ট্রিট ফুড নিয়ে হাজির ট্রাম-রেস্তরাঁ। গতবছর ৩১ ডিসেম্বর থেকেই ট্রাম-রেস্তরাঁ পথ চলা শুরু করেছে। ট্রামের সম্পূর্ণ বগিটাই একটি রেস্তরাঁ, তবে পাবেন বেস্ট স্ট্রিট ফুড। কলকাতা মানেই স্ট্রিট ফুড আর আপামর সাধারণ মানুষ বড় রেস্তরাঁর থেকে সুন্দর পরিবেশে এই ধরনের খাবার খেতেই পছন্দ করেন। চারপাশে কলকাতার সঙ্গে যুক্ত হাতে টানা রিকশা, লাল ডবল ডেকার বাস এবং হলুদ ট্যাক্সি আপনি সবকিছুই পেয়ে যাবেন। কী ভাবছেন? আসলেই মন ভাল করার এই জায়গায় পুরনো স্মৃতি কিন্তু তাজা হতে বাধ্য! বলা উচিত এক টুকরো ছোটবেলা ফিরে পাবেন অবশ্যই।
ট্রামের অন্দরমহল থেকে খাবারদাবার আপনার নজর কাড়তে বাধ্য! ট্রামের সিটের আদলেই টেবিল চেয়ার, বসতে পারবেন গুনে গুনে ২০ জন - আর খাবার এক্কেবারে লাজবাব! কথা বলা হয়েছিল ম্যানেজার তারাশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি বলছেন, “শহর কলকাতার মধ্যে এমন সুন্দর পরিবেশে রেস্তরাঁ আর হয় না। খাবার যেমন ভাল, তেমনই খরচ সাপেক্ষ, কি নেই এখানে! চাট, পাও-ভাজি, চিকেন স্টু, মোগলাই পরোটা, রোল, ছোলে ভাটুরে কত কী! মোট কথা, যত ধরনের খাবার হয় সবরকম তুলে ধরা হয়েছে।” বেলা ১২টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত খোলা থাকছে এই ট্রাম-রেস্তরাঁ।
এতরকমের খাবারের মধ্যে, কোনটি সবথেকে বেশি স্পেশ্যাল? তারাশঙ্কর বাবুর মন্তব্য, এখানে সবকিছুই ভাল। তবে বিশেষ করে চিকেন স্টু, কাবাব, রোল এগুলোও দারুণ খেতে। মানুষজন আসছেন, জায়গাটিকে উপভোগ করছেন, খাবার খেয়ে প্রশংসা করছেন। কম খরচে এত ভাল খাবার না খেলেই নয়!
কী ভাবছেন করোনা কালে যেতে পারবেন কিনা? অবশ্যই পারবেন! কেন নয়! ম্যানেজার বাবু জানিয়েছেন কোভিড নিয়ে একেবারেই ভয় নেই। প্রতিদিন স্যানিটাইজ করা হয় সেই রেস্তরাঁ। প্রত্যেক কর্মী নিজেদের যথেষ্ট ভাল করে হাইজিন রাখছেন, মাস্ক পরছেন, যাতে অতিথিদের অসুবিধা না হয় সেইদিকে নজর রাখছেন, তাই অতিমারিতে এটি এক্কেবারে সেফ জোন। খাবারের সঙ্গে নিদারুণ পরিবেশ উপভোগ করতে হলে ঢুঁ মারতেই হবে এই রেস্তরাঁয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন