দ্রুত, খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে এই শহর। চেনা মুখগুলো অচেনা হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। আর এই পাল্টানো সময়ে এক মুঠো ঠাণ্ডা হাওয়ার মতো মন জুড়িয়ে দেয় এরকম এক একটা খবর। যে শহরে সবুজ ধ্বংস করে ইট-কাঠ-পাথরের সাম্রাজ্য বিস্তার হচ্ছে রোজ রোজ, সেই কলকাতাতেই শুধু গাছেদের নিয়ে লাইব্রেরি তৈরি হল রাজারহাট-নিউটাউনে। তিন একর জায়গা জুড়ে খোলা আকাশের নীচেই তৈরি হল গাছেদের পাঠাগার।
হিডকো, এনকেডিএ, বন দফতর এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে শহরে সবুজ সংরক্ষণের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হল। নিউটাউনে বিশ্ববাংলা গেটের এক কিলোমিটারের মধ্যেই তৈরি হল এই সবুজ পাঠাগার। নিউটাউনের স্নেহদিয়া (প্রবীণদের অবসর যাপনের ঠিকানা) আবাসনের একদল প্রবীণ নাগরিক গাছের চারা রোপণ করে উদ্বোধন করলেন 'ট্রি লাইব্রেরি'। এই প্রসঙ্গে হিডকো-র চেয়ারম্যান শ্রী দেবাশিস সেন জানালেন, "প্রবীণ আবাসিকদের দিয়ে চারা রোপণ করাতে চেয়েছিলাম, কারণ আগামী প্রজন্মকে সবুজ চর্চার পাঠ ওঁরাই তো দিয়ে যান"।
আরও পড়ুন, পাখিরা আবার ফিরবে শহরে, কলকাতায় তৈরি হবে ‘মিনি ফরেস্ট’
ছবি সৌজন্য- শ্রী দেবাশিস সেন
ঠিক কী থাকবে এই গাছেদের পাঠাগারে? প্রশ্নের উত্তরে দেবাশিস বাবু জানালেন, প্রতিটা গাছের সঙ্গেই তাদের বৈজ্ঞানিক নাম, বাংলা প্রজাতি, গোত্র, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সব উল্লেখ থাকবে গাছের পাশেই। রাজ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের ওপর গাছের প্রজাতি রয়েছে। তার সবকটিরই উল্লেখ থাকবে লাইব্রেরিতে। অদূর ভবিষ্যতে বাংলার উদ্ভিদ বৈচিত্র সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণের জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে রাজ্য সরকারের।
যে শহরে একের পর এক পড়শি গাছেদের কেটে, উপড়ে ফেলতে দেখেও মন এতটুকু বিচলিত হয় না আমাদের, সে শহরে স্বার্থ ভুলে একদিন শুধু সবুজের জন্যেই হাতে হাত রাখবে সহনাগরিক, এই ভাবনাটুকুতেই মন ভালো হয়ে যায়।