আলিয়া কাণ্ডে নিগৃহীত উপাচার্যের কাছে অবশেষে রিপোর্ট তলব করল রাজ্য সরকার। রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতরের তরফে মহম্মদ আলির কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে খবর। শনিবার উপাচার্যকে নিগ্রহের ঘটনা সামনে আসতেই তার পরের দিন রবিবার গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্ত গিয়াসউদ্দিন মণ্ডলকে। ঘটনার তিন দিন পর রিপোর্ট তলব করল রাজ্য সরকার।
চিঠি পাঠালেও কতদিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে তার কোনও উল্লেখ নেই চিঠিতে। রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা সংক্রান্ত দফতরের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বহিষ্কৃত টিএমসিপি নেতা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডলকে গত রবিবার গ্রেফতার করে টেকনো সিটি থানার পুলিশ। আদালত তাঁকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তবে বাকিরা এখনও অধরা।
এদিকে, অপমানের জ্বালায় আর উপাচার্যের পদে থাকতে চান না মহম্মদ আলি। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমবার জানান, তিনি দায়িত্ব ছাড়তে চান। বহিষ্কৃত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল এবং তাঁর সঙ্গীদের হাতে নিগৃহীত হওয়ার পর আর আলিয়াতে থাকতেই চাইছেন না মহম্মদ আলি। সোমবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
তিনি বলেছেন, “আমি সম্মানিত বা সুরক্ষিত কোনওটাই আর অনুভব করছি না। আমার পুরনো জায়গা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে চাই। আমি যাদবপুরের ভিসি সুরঞ্জন দাসকে এই মর্মে চিঠিও দিয়েছি। আমার মনে হয়, আমি শিক্ষক হিসাবে ব্যর্থ হয়েছি।” বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন তিনি।
আরও পড়ুন ‘একটু কটূ কথা বলেছে, পুলিশ তো গ্রেফতার করেছে!’, আলিয়া কাণ্ডের প্রশ্নে বিরক্ত মমতা
সোমবারই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিগ্রহের ঘটনায় মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “আলিয়ার একটা অংশের ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে। তাঁরা সবাই ভাল। তবে কয়েকজন আছে, তাঁদের ক্ষোভ রয়েছে। যে একটু কটু, খারাপ কথা বলেছে, তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আমাদের এখানে পুলিশ অ্যাকশন নেয়।”
আলিয়া কাণ্ডে প্রশ্ন শুনে বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী। বিরক্তি প্রকাশ করে মমতা বলেন, “আপনার কি এটা খুব গুরূত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে? পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে।” যদিও বিরোধীদের দাবি, পুলিশ মোটেও সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়নি। উপাচার্যকে নিগ্রহের ৪৮ ঘণ্টা পর গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত গিয়াসউদ্দিনকে। তাঁর গ্রেফতার হওয়ার পর শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি গিয়াসউদ্দিনকে নিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলে। তৃণমূল দাবি তোলে, অহেতুক রাজনীতি করা হচ্ছে।