সপ্তাহের প্রথম দিন কলকাতার রাস্তায় সেভাবে দেখা মিলল না হলুদ ট্যাক্সির। এদিকে, বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলি তো ঘোষণা করেই দিয়েছে যে পুরানো ভাড়ায় ১৫-২০ জন যাত্রী নিয়ে তাঁদের বিপুল আর্থিকক্ষতি হবে। অর্থাৎ তাঁরা পথে বাস নামাবেন না। ফলে এদিন যাঁরা রাস্তায় বেরিয়েছিলেন তাঁদের ভরসা ছিল একমাত্র সরকারি বাস। তবে সামাজিক দূরত্ব বিধি মানার কারণে বাসের যাত্রী সংখ্যা সীমিত হওয়ায় অনেক যাত্রীই বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে মাঝ রাস্তায় অপেক্ষা করা যাত্রীরা হয়রান হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় রাস্তায় বাসের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়েছে।
সোমবার নামমাত্র সংখ্যায় হলুদ ট্যাক্সি নেমেছে মহানগরের পথে। যাত্রী তেমন একটা নেই বলেই হলুদ ট্যাক্সি নামছে না বলে জানিয়েছে ট্যাক্সি সংগঠনগুলি। বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা বিমল গুহ বলেন, "রাস্তায় লোক নেই তো কী হবে। আমরা তো চেয়েছিলাম শ'দুয়েক ট্যাক্সি রাস্তায় বের করতে। কিন্তু ২০০ ট্যাক্সিতে চড়ার মত যাত্রীই নেই। এদিকে লকডাউনও ফের বেড়ে গেল। আমরা গত ২৩ এপ্রিল থেকে প্রায় ৫০টা ট্যাক্সি চালাচ্ছি। সোমবারও ৪০-৫০টা ট্যাক্সি রাস্তায় নেমেছে।" হলুদ ট্যাক্সি চলছে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল ৩-৪ পর্যন্ত। জানালেন বিমলবাবু।
পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ঘোষণা অনুযায়ী এদিন সরকারি বাস রাস্তায় থেকেছে। তবে বেসরকারি বাস একেবারেই নামেনি। বাসের ভাড়া বৃদ্ধি না হওয়ায় বৈঠক করেছেন বাস মালিকরা। ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস ও মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বসু বলেন, "এক লাখের ওপর শ্রমিক, মালিক বসে রয়েছে। সরকারকে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করতে অনুরোধ করছি। পুরনো ভাড়ায় বাস চালানো সম্ভব নয়। শ্রমিকদের ১০ লক্ষ টাকার বিমাও করাতে হবে। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার জ্বালানী তেলে ভর্তুকি না দিলে ১৫-২০ জন যাত্রী নিয়ে বাস চালানো অসম্ভব।" বাস না নামানোর সিদ্ধান্তে অটল জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটও। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "বাস ভাড়ার তালিকা চেয়েছিল, সরকারকে দিয়েছিলাম। বিবেচনা করে নতুন ভাড়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। একই ভাড়ায় এত কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বাস চালানো কী কোনও ভাবে সম্ভব?"
এদিকে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তায় ওলা-উবেরের ২০০ ট্যাক্সি চলছে। তার জন্য ই-পাসের দরকার। তবে এ সপ্তাহে ৫০০ করে ১০০০ হাজার ওলা-উবের নামার কথা রয়েছে। তবে তা নামতে এখনও কয়েকটা দিন সময় লাগবে। ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ডের পক্ষে ইন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এখনই ৫০০ করে গাড়ি নামানো সম্ভব হবে না। এখনও সমস্ত নথিপত্র প্রস্তুত হয়নি। লগ ইন না করলে সার্ভিস চালু হবে না। আমার সঙ্গে দুই সংস্থার কথা হয়েছে। তাতে মনে হয়েছে এখনও দু-তিন দিন সময় লাগবে। কিন্তু ক্যাব চালকরা প্রস্তুত রয়েছেন।" তিনি জানান, হাওড়া স্টেশনে লাক্সারী ট্যাক্সি মিলছে। ট্রেন থেকে নেমে সহজে যাতে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে তার জন্য এই ব্যবস্থা। সেখানে প্রায় ১০০-র মত ট্যাক্সি থাকছে।