মিরাকল ঘটালেন ‘টিম এনআরএস’ চিকিৎসকরা। দেড় ফুটের ত্রিশূল গলায় ঢুকে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় যুবকের। চিকিৎসকদের চেষ্টায় নতুন প্রাণ পেলেন ৩৩ বছরের ভাস্কর রাম। পরিবারের অভিযোগ, রবিবার রাত ১১টা নাগাদ ভাস্করের ঘরে ঢুকে তাঁর উপর হামলা করেন প্রতিবেশি দুই যুবক। ভাঙচুর করা হয় ঘরের থাকা যাবতীয় আসবাব পত্র। এরপরই ঘরের কোনে থাকা ত্রিশূল সোজা গেঁথে দেন ভাস্করের গলায়। দেড় ফুটের ত্রিশূল গলায় বিঁধে ভাস্করের তখন মর মর অবস্থা। বাড়ির লোকেরা ছুটে আসেন, দেখেই চক্ষু চড়কগাছ। গলা ফুটো করে ঢুকে গিয়েছে ত্রিশূল। ওই অবস্থাতেই ভাস্করকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে দেখে তখন সেখানে থাকা চিকিৎসকদের চোখ একেবারে ছানাবড়া। প্রাথমিক চিকিৎসার পরই ভাস্করকে কলকাতায় রেফার করা হয়।
তখন প্রায় রাত তিনটে। ভাস্করকে নিয়ে এনআরএস হাসপাতালে আসেন পরিজনেরা। ওই অবস্থায় তাঁকে দেখে চিকিৎসকেরাও হতবাক। ত্রিশূল গলার একদিক থেকে ঢুকে অন্যদিক দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশনের মাধ্যমে ত্রিশূল বের করতে দেরি করেনি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তাঁর শ্বাসনালীর দিকটা ঠিকঠাক রাখা যায় তার জন্য করা হয় ট্র্যাকিওস্টমি। তারপর পুরোপুরি অজ্ঞান করে ত্রিশূলটিকে অত্যন্ত ঝুঁকির সঙ্গে বের করেন হাসপাতালের ইএনটি এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারের পর বার হয় ত্রিশূল। নতুন প্রাণ পান নদীয়ার যুবক। একটু এদিক ওদিক হলেই মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারত বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। মিরাকেল এই অস্ত্রোপচারের পর সাফল্যে বিরাট খুশি ইএনটি বিভাগীয় প্রধান সুমন্ত দত্ত।
আরও পড়ুন: [ শ্রদ্ধার ধাঁচেই হত্যা, খুনের পর টুকরো দেহ! চাঞ্চল্যকর ঘটনায় চোখ কপালে পুলিশের ]

এদিকে ভাস্করের ওপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষিপ্তে ইতিমধ্যে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ২ জনকে আটক করে। তবে ঠিক কী কারণে এই হামলা তা জানা যায়নি। তবে এদিনের এই বিরল অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে হাসপাতালের প্রিন্সিপ্যাল অধ্যাপক পিত বরণ চক্রবর্তী বলেন, ভাস্করকে দেখে প্রথমেই চিকিৎসকরা হতবাক হয়ে যান। তবে রীতিমত অস্ত্রোপচারকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নেন ইএনটি এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা। প্রায় দেড় ঘন্টার সফল অস্ত্রোপচারের পর দেড় ফুটের ত্রিশূলটিকে বের করে আনেন চিকিৎসকরা।