Advertisment

চৈত্রের দাবদাহে নাজেহাল চিড়িয়াখানার আবাসিকরা, দইভাত, লস্যির ডায়েটে ভাল্লুক-শিম্পাঞ্জিরা

প্রচণ্ড গরমে সাধারণ মানুষের মতোই কালঘাম ছুটে যাচ্ছে আলিপুর চিড়িয়াখানার আবাসিকদেরও।

author-image
Sayan Sarkar
New Update
NULL

তীব্র দাবদাহে নাজেহাল চিড়িয়াখানার আবাসিকরা

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তীব্র দাবদাহে নাজেহাল দক্ষিণবঙ্গবাসী। দেখা নেই বৃষ্টির। চৈত্রের শুরু থেকেই প্রচণ্ড গরমে পুড়ছে সমগ্র দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে কলকাতাও। প্রচণ্ড গরমে সাধারণ মানুষের মতোই কালঘাম ছুটে যাচ্ছে আলিপুর চিড়িয়াখানার আবাসিকদেরও।

Advertisment

তীব্র গরমে তাই রীতিমত বদল আনা হয়েছে তাদের খাদ্য তালিকায়। সেই সঙ্গে সকালের দিকেই স্নান সেরে নিচ্ছে, বাঘ সিংহ শিম্পাঞ্জির দল।  জিরাফ, ভালুক, ক্যাঙারু, হাতি, বাঘ, সিংহ সবাইকে দেওয়া হচ্ছে পশু চিকিৎসকের নির্দেশ মতো খাবার। গরমে যাতে কাহিল হয়ে না পড়ে চিড়িয়াখানার আবাসিকরা তাই তাদের দিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। সামান্য উনিশ বিশ দেখলেই পশু চিকিৎসক দের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। ভালুককে দেওয়া হচ্ছে দই-ভাত। শিম্পাঞ্জিকে ঘোল এবং সেই সঙ্গে  দেওয়া হচ্ছে আম, তরমুজ, শসা জাতীয় রসাল ফল।  কাকাতুয়া এবং অন্যান্য পাখিদের দেওয়া হচ্ছে আঙুর, তরমুজ।

কলকাতার তীব্র গরমের সঙ্গে যাতে খাপ খাইয়ে নিতে অসুবিধা না হয়, তাই পশুপাখিদের খাঁচায় লাগানো হয়েছে সিলিং ফ্যান। একই সঙ্গে চিড়িয়াখানার বাসিন্দাদের সুস্থ রাখতে দেওয়া হচ্ছে ওআরএস। পশুদের ডিহাইড্রেশন এড়াতে জলের ব্যবহারে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য যাতে না-হয়, সেদিকে নজর দিয়েছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। নিরামিষভোজীদের খাবারের তালিকায় যোগ হয়েছে প্রচুর পরিমাণ তরমুজ ও শসা। আমিষাশীদের মেনু থেকে মোষের মাংস কমিয়ে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মুরগি। টক দই আর ভাত খেয়েই আপাতত আনন্দে দিন কাটছে ভালুকের। বিশেষ যত্ন নেওয়া হচ্ছে পাখিদের উপরেও। প্রতিদিন স্প্রিঙ্কলার দিয়ে স্নান করানো হচ্ছে এমু, ম্যাকাও, কাকাতুয়া, টিয়া ও অন্য পাখিদের। সাপেদের ক্ষেত্রেও গরমে সতর্ক চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সাপের এনক্লোজারেও গরম ঠেকাতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

এবিষয়ে আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্ত বলেন, “প্রচণ্ড গরমে আমাদের মত পশুপাখিদের কষ্টটাই স্বাভাবিক। তবে তাদের গরম কমাতে একগুচ্ছ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিদিন সকালে নিয়ম করেই বাঘ, সিংহকে ,শিম্পাঞ্জিকে স্নান করানো হচ্ছে।  সেই সঙ্গে একাধিক এনক্লোজারে লাগানো হয়েছে ফ্যান। ফলের মধ্যে রসালো ফল যেমন তরমুজ, অনারস খেতে দেওয়া হচ্ছে নিরামিষাশী পশুদের। গরমে ডায়েট চার্ট পরিবর্তন করা হচ্ছে। বাঘ, সিংহদের মাংসের পরিমাণ কমানো হচ্ছে। শিম্পাঞ্জি ঘোল, লস্যি বেশ উপভোগ করেই খাচ্ছে। দই ভাতে খুশি ভাল্লুকও। সেই সঙ্গে তিনি জানান, প্রতিটি এনক্লোজারে সর্বক্ষণ নজর রাখা হচ্ছে। সামান্য আচরণগত পরিবর্তন হলেই চিকিৎসকদের ডাকা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন আপাতত চিড়িয়াখানার আবাসিকরা সকলেই সুস্থ রয়েছে। ফল জাতীয় খাবার এবং রসাল খাবারের ওপরেই আপাতত জোর দেওয়া হয়েছে"।

এদিকে প্রচণ্ড গরমেও চিড়িয়াখানায় উৎসাহী মানুষের ভিড় চোখে পড়ছে। পলতা থেকে পরিবারের সঙ্গে চিড়িয়াখানায় এসেছেন পৌলমি দত্ত। বাঘের এনক্লোজারের সামনে কৌতূহলী চোখে চেয়ে রয়েছেন তিনি। সঙ্গে রয়েছে তার বছর দুয়েকের ছেলে। শীতকাল ছেড়ে গরমে চিড়িয়াখানায় কেন, প্রশ্ন করতেই তার উত্তর, “করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে তাই বাচ্চা নিয়ে বেরোতে সাহস পেয়েছি। ফাঁকায় ফাঁকায় বেশ ভালোই উপভোগ করছি চিড়িয়াখানার পরিবেশ”।

alipore zoo
Advertisment