কালীপুজোর আগের সন্ধ্যায় ১৪ প্রদীপ জ্বালানোর রীতি আছে। তবে, আর্থিক কারণে প্রদীপ জ্বালানোর রীতি অনেকেই মানেন না। বদলে, এই সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালান। এবছর ১২ নভেম্বর, রবিবার কালীপুজো। তার আগের দিন হল আজ অর্থাৎ ১১ নভেম্বর, শনিবার। কার্তিক অমাবস্যা তিথিতে কালীপুজো হয়। আর, অমাবস্যার আগের তিথি হল চতুর্দশী। যা, এবছর শনিবারে পড়েছে। এই চতুর্দশী ভূত চতুর্দশী নামে পরিচিত। ভূত চতুর্দশীর পাশাপাশি, শাস্ত্রমতে এই তিথিকে নরক চতুর্দশীও বলে। কারণ, এই তিথিতে নাকি নরকের দ্বার খুলে যায়। যার ফলে ভূত-প্রেত নরক থেকে বেরিয়ে আসে। এরই সঙ্গে প্রচলিত মত যে এই তিথিতে অমর দৈত্যরাজ বলি পাতাল বা নরক থেকে সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে মর্ত্যে আসেন। তাঁর সঙ্গী-সাথীরা হলেন ভূত-প্রেত।
এই তিথি সম্পর্কে ধারণা
অনেকের মতে, এই তিথিতে ভূত-প্রেত মর্ত্যলোকে ঘোরাফেরা করে। আর, এই বিশ্বাস থেকেই আগেকার দিনে সন্ধ্যার পর এই তিথিতে বাড়ির বাইরে যেতে মানা করা হত। পদ্মপুরাণ অনুযায়ী, ভূত চতুদর্শীতে গঙ্গাস্নান করলে কম নরক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। পাশাপাশি, এই চতুর্দশী যম চতুর্দশী নামেও পরিচিত। এই তিথিতে যমরাজ, ধর্মরাজ, কাল, মৃত্যু, অন্তক, সর্বভূতক্ষয়, বৈবস্তত, বৃকোদর, দধ্ন, পরমেষ্ঠী, চিত্র, চিত্রগুপ্ত, নীন, উড়ুম্বর- এই ১৪ যমের উদ্দেশ্যে তর্পণের রীতিও প্রচলিত আছে।
আরও পড়ুন- (শনিবার দুপুর পর্যন্ত ত্রয়োদশী) ধনতেরসে কী করলে হবেন মালামাল, কোন কাজ ভুলেও করবেন না, এখনই জেনে নিন
কেন জ্বালানো হয় ১৪ প্রদীপ
এই সব কারণে, অশুভ শক্তি বা ভূত-প্রেত আলো দেখলে ভয় পায়। তাই তাদের নিজের গৃহ থেকে দূরে রাখতে ১৪ প্রদীপ জ্বালানোর রীতি প্রচলিত আছে। আবার এমনটাও মত আছে, ১৪ যমকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয় কৃষ্ণা চতুর্দশীতে। যাতে যম খুশি হন। আর, তার ফলে অকাল মৃত্যুর ভয় এড়ানো যায়। এর পাশাপাশি, এমনটাও প্রচলিত মত যে বাড়ির ১৪ পুরুষকে এই বিশেষ তিথিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে পথ দেখানো হয়। যাতে তাঁরা অন্ধকারে পথ গুলিয়ে না-ফেলেন।