এই কলকাতা শহরে খাবারের অন্ত একেবারেই নয়। নানান ধরনের ব্যঞ্জন থেকে স্ট্রিট ফুড, চাইনিজ কিংবা ইটালিয়ান কী পাবেন না এখানে? কমতি নেই কিছুরই! কলকাতা মানেই যেমন চাইনিজ আর তন্দুর তেমনই বহু প্রাচীন সময় থেকে ইউরোপীয় সাহেবিয়ানা ঘিরে রেখেছে শহরের মাস্তুল থেকে দেয়াল কিংবা কার্নিশ, ইউরোপিয়ান আধিপত্য থেকেই সেখানকার নানা মন ভাল করা খাবার, বাঙালির কিন্তু পাশ্চাত্যের খাবারের ঝোঁকও মারাত্মক! সেই সংস্কৃতির কথা মাথায় রেখেই শিলাদিত্য এবং দেবাদিত্য চৌধুরির নতুন প্রচেষ্টা, অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ফুড ফেস্টিভ্যাল।
বৃহস্পতিবার একদম নতুন সংস্করণ নিয়েই হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। সঙ্গে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সদস্যদের বেশ কিছু চেনা মুখ, জেসিকা সুরানা, প্রিসিলা কর্নার, ব্লসম রে, ক্যান্ডিস ফ্রান্সিস, পিটার রেমেডায়োস এবং অন্যান্যরা। ইউরোপের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বহুদিনের, শুধু আহারে নয় বাহারেও বটে। পোশাক হোক কিংবা ভাষা পাশ্চাত্য প্রভাব কিন্তু লক্ষ্য করার মত।
শিলাদিত্য এবং দেবাদিত্য বলছেন, "অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ফুড ফেস্টিভ্যাল দুই সম্প্রদায়ের মিলিত রন্ধন-প্রণালিকে একজোট করে। এর সমৃদ্ধ এবং এক প্রাণবন্ত ইতিহাস রয়েছে, এর জন্য অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। প্রাচীন কিন্তু অভূতপূর্ব সেই স্বাদকে ফের জাগিয়ে তোলাই একমাত্র লক্ষ্য। এর নির্দিষ্ট কিছু রেসিপি রয়েছে যেগুলি শুধু অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পরিবারেই তৈরি করা সম্ভব! শেফ হিসেবেও তাঁরা বেছে নিয়েছেন এমন একজনকে-ই, যাঁর হাতে ছোঁয়া রয়েছে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান খাবারের। শেফ সুশান্তর ঠাকুরদা স্বর্গীয় বিজয় হালদার নিজেই স্কাইরুমে রান্না করতেন। সুশান্ত এখন তাঁর ঠাকুরদার দেখানো পথেই কলকাতার রন্ধন ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করছেন। আমরা আশা করছি, রেসিপি এবং স্বাদের এই নতুন সংস্করণ আমাদের অতিথিদের মন কাড়বে, ভাল লাগবে।"
মেনুতে স্পেশ্যাল কী কী থাকবে সেখানে? প্রতিদিন দুপুর ১২ টা থেকে রাত ১১টা আপনাদের সকলের জন্য চ্যাপ্টার ২, এর দরজা অবশ্যই খোলা থাকবে। অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মেনুতে, কোল্ড কিউকাম্বার সূপ, বিফ ম্যাকারনি সুপ, রেলওয়ে প্রণ কাটলেট, অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মিক্সড ভেজিটেবল কাটলেট, বিফ চিলি ফ্রাই, অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পর্ক রোস্ট, মিক্সড ভেজিটেবল ফুগাথ, কান্ট্রি ক্যাপ্টেন চিকেন কারি, পর্ক ভুনি, পর্ক সর্পটেল এবং প্রণ বালচাও! মানে একই ছাদের নিচে মাছ মাংসের কিছু দুর্দান্ত আর নতুন খাবারের আয়োজন। খাবারের দাম সাধ্যের মধ্যেই, ২৫০ থেকে ৫৫০ পর্যন্ত, মিলিয়ে গুছিয়ে দুইজনের জন্য ১০০০ টাকা ( প্লাস ট্যাক্স )
ঠিকানা: পি-৩৭৭, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সরণি, সাউদার্ন এভিনিউ, কলকাতা -২৯
দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ বহুদিনের। ঔপনিবেশিক আমল থেকেই বাবুর্চিদের প্রচেষ্টা এবং নানান মশলার প্রয়োগে পাশ্চাত্যের খাবারের স্বাদগুলিতে নয়তো রদবদল ঘটিয়েছে নয়তো বা মশলা কিংবা এর প্রভাব কমিয়ে দিয়েছে। স্বাধীনতার পরে ইউরোপীয় অথবা ফরাসি কিংবা পর্তুগিজ যাঁরা থেকে গিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে থেকে বেশ কিছু মানুষ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ভারতীয়দের সঙ্গে, পরবর্তীতে বিনিময় হয় এক বিস্তৃত সংস্কৃতির। এই ভিন্ন স্বাদের খাবার কিংবা স্বতন্ত্র খাবারগুলোর স্বাদ আস্বাদন যাতে সকলেই করতে পারে এই প্রচেষ্টাই করেছেন এই দুই বঙ্গতনয়।