বিশ্বের সবরকম পানীয় গুলির মধ্যে যদি কোনওটি মানুষের সবথেকে কাছের হয় তবে সেটি চা। আর বাংলার বুকে এমন মানুষ খুব কম আছেন যারা সকালের শুরু থেকে সন্ধ্যের মাঝে চা ব্যতীত থাকতে পারেন। ব্ল্যাক টি হোক কিংবা মশলা চা অথবা দুধ চা আপনার পছন্দের তালিকায় অনেক কিছুই থাকতে পারে। কিন্তু চা অবশ্যই এমন একটি বিষয় যেটি ছাড়া দিন পার হয় না। একবারও ভেবে দেখেছেন যে এই চায়েই যদি ভেজাল থাকে?
Advertisment
ভারতীয় টি বোর্ডের পক্ষ থেকে এমন অশনি সংকেত দেওয়া হচ্ছে জনস্বার্থে। রাসায়নিক ভাবে রং করা চায়ের এখন বাজারে ছড়াছড়ি। এবং সেই থেকেই মানুষের শরীরে কিন্তু নানান ধরনের রোগের সূত্রপাত ঘটছে। তাদের বিবৃতি অনুযায়ী মাঝে মধ্যেই চায়ের মধ্যে নানান ধরনের কেমিক্যাল অথবা রঙের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়, যেটি কিন্তু একেবারেই বৈধ নয় -একেই সাধারণত ভেজাল চা বলা হয়। অনেক সময় নাকি একে বিভিন্ন ধরনের রং যেমন নীল, হলুদ, বাদামি দিয়ে চকচকে ভাব আনার জন্য রং করা হত।
ভোক্তাদের দৃষ্টিভঙ্গির থেকে বিচার করলে চায়ের কৃত্তিম রঙের বিষয়টি খুবই খারাপ এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকারক। ফলেই জনমানসে উদ্বেগ ক্রমশই বাড়ছে। ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার ২.১০.১(১) রেগুলেশন অনুযায়ী চায়ের মধ্যে কৃত্রিম রং এবং ভেজাল থাকার অর্থ সেটি আইনত অবৈধ কাজ।
Oolong Tea is often called semi-fermented or semi-oxidised tea. The time of picking is crucial for Oolong Tea - the leaves should be neither too young nor too mature. Oxidation levels in Oolong can vary from 8% to 80% depending on the type of Oolong Tea one wants to manufacture. pic.twitter.com/f6F1vdAbnI
তাদের মতে সারাদেশের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ চায়ের মধ্যে দার্জিলিং, কাংরা, আসাম এবং নীলগিরি - মানুষ সবথেকে বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু এগুলি সবই জি আই আইন দ্বারা চুক্তিবদ্ধ - তার কারণ এগুলি বিশ্বদরবারে বেশ জনপ্রিয়। টি বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে, যখনই চা উৎপাদন করা হয় তখন এমনিতেই অনেক ক্ষতি হয়, এর প্রাকৃতিক গুণ হারিয়ে যেতে থাকে। তারপরেও বেশ কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে একে উন্নত মানের এবং চকচকে করে তোলা হয় তারমানে এই নয়, কৃত্রিম রং দিয়ে সেটিকে ভরাট করা হবে।
কীভাবে পরীক্ষা করে নেবেন আপনার চাআদৌ সঠিক কিনা?
একটি ফিল্টার পেপার নিন এবং তার ওপরে চায়ের পাতা ছড়িয়ে দিন। সামান্য জল ছিটিয়ে পেপারটি ভিজিয়ে নিন। কিছুক্ষণ পর সম্পূর্ণ ফিল্টার পেপারটি জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এবার লক্ষ্য করুন যদি পেপারের ওপর কোনও রং থাকে, হালকা দাগ থেকে যায় তবে এটি সুরক্ষিত নয়। কারণ ভেজাল চায়ের থেকে দাগ থেকে যাওয়া স্বাভাবিক।
কর্তৃপক্ষ থেকে সকলের উদ্দ্যেশে জানানো হয়েছে, চায়ে খারাপ ধরনের রঙের ব্যবহারের তথ্যটি সম্পূর্ণ সঠিক। এবং সেই কারণেই ভাল ব্র্যান্ডের চা কেনা আবশ্যিক। অনেক জায়গাতেই খোলা প্যাকেট করা চা পাওয়া যায়, সেটি ভাল নয়। কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে নীচু মানের চা গুলিকে আইনত ভাবে রোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত চা কোম্পানি খারাপ রং ব্যবহার করে থাকেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করার মত সিদ্ধান্তও নিয়েছে। যেকোনও পরিসরে খারাপ রং ব্যবহার বন্ধ করা উচিত। যদিও বা দরকারে রং ব্যবহার করা হয় তবে একে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নানান পর্যায়ে পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে পার্সিয়ান ব্লু একটি নিরন্তর ভেজাল পদার্থ, এর কারণেই চায়ের গুণমান কমে গিয়ে এটিকে ভেজালে পরিণত করে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন