দূষণের জেরে বাতাসে বিষ ছড়াচ্ছে, যা মৃত্যু ডেকে আনছে। ধূমপানের থেকেও বেশি রোগ ডেকে আনছে বায়ু দূষণ। শুধু তাই নয়, রোগের প্রকোপ যেমন বাড়ছে, তেমনই দূষণের জেরে মানুষের আয়ু কমছে। এ দেশে প্রতি আটটি মৃত্যুর একটি ঘটে বায়ু দূষণের কারণে। একটি রিপোর্টে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যই মিলেছে।
দেশের প্রতিটি রাজ্যে বায়ু দূষণের জেরে মৃত্যু, রোগ, আয়ু সংক্রান্ত ইন্ডিয়া স্টেট লেভেল ডিজিজ বার্ডেন ইনিশিয়েটিভের তথ্যাদি প্রকাশিত হয়েছে দ্য ল্যান্সেট প্ল্যানেটারি হেলথে। সেখানেই এই তথ্য উঠে এসেছে। উল্লেখ্য, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর), পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া (পিএইচএফআই) ও ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন (আইএইচএমই)-এর যৌথ উদ্যোগই হল ইন্ডিয়া স্টেট লেভেল ডিজিজ বার্ডেন ইনিশিয়েটিভ।
ওই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে, ২০১৭ সালে ১২.৪ লক্ষের অর্ধেকেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে বায়ু দূষণের জেরে। বায়ূ দূষণের মাত্রা নূন্যতম পর্যায়ের থেকে যদি কম হত, তবে এ দেশে গড় আয়ু ১.৭ বছর বাড়ত। এমন কথাই উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। দ্য ল্যান্সেট প্ল্যানেটারি হেলথের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, বিশ্বে যত দেশ রয়েছে, তার মধ্যে এ দেশে বার্ষিক ধূলিকণার মাত্রা সবথেকে বেশি। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে, বিশেষত, বিহার, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান ও ঝাড়খণ্ডে বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা ও বায়ু দূষণের মাত্রা সবথেকে বেশি। অন্যদিকে, দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাবে ধূলিকণার মাত্রা সবথেকে বেশি।
আরও পড়ুন: ভারতে ৫ বছরের নীচে প্রায় ৯৮ শতাংশ শিশুই বায়ু দূষণের শিকার: WHO-এর রিপোর্ট
এ প্রসঙ্গে ডাঃ বলরাম ভার্গব বলেছেন যে, দেশের প্রতিটি রাজ্যে বায়ু দূষণের জেরে শরীরে তার কী প্রভাব পড়ছে, সে সম্পর্কে সম্যক ধারনা থাকা আবশ্যক। পরিস্থিতি বদলানোর জন্য এ সম্পর্কে সকলকে অবগত হওয়া দরকার। তিনি আরও বলেছেন যে, ঘরবাড়ি থেকে যে দূষণ ছড়াচ্ছে, তার মাত্রা অনেকটা কমছে। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার জন্য।
এ দেশে বায়ু দূষণের প্রভাব সম্পর্কে ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন (আইএইচএমই)-র ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার মারে বলেছেন, "বায়ু দূষণের ফলে ভারতে শুধুমাত্র ফুসফুসের রোগই যে হয় তা নয়, কার্ডিওভাসকুলার রোগ ও ডায়াবেটিসেরও অন্যতম কারণ হলো দূষণ।" দেশে এই দূষণ কমানোর অনেক উপায় রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র তথ্যানুযায়ী, বায়ু দূষণে সবথেকে জেরবার পৃথিবীর ৫টি শহরের মধ্যে ১৪টি শহরই এ দেশে। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে মেক্সিকো সিটি ও বেজিংয়ে যেভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা নয়া দিল্লি ও ভারতের অন্য শহরগুলিতে দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য উপযোগী হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টার মাধ্যমে দূষণ সমস্যা মোকাবিলা করা হয়েছে মেক্সিকো সিটি ও বেজিংয়ে।
Read the full story in English