/indian-express-bangla/media/media_files/2025/11/03/amartya-sen-2025-11-03-09-07-34.jpg)
Amartya Sen: অমর্ত্য সেন।
Amartya Sen Birthday: ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক অমর্ত্য সেনের আজ জন্মদিন। ১৯৩৩ সালের ৩ নভেম্বর তিনি তৎকালীন পূর্ববঙ্গের মানিকগঞ্জে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। অমর্ত্য সেনের জীবনের প্রতিটি অধ্যায় কেবল অর্থনীতির বই নয়, মানবতার পাঠের ভিত্তিতে তৈরি।
শৈশব ও নামকরণের গল্প
অমর্ত্য সেনের নাম রেখেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। 'অমর্ত্য' শব্দের অর্থ 'অমর' বা 'অবিনশ্বর'। তাঁর পরিবারের সঙ্গে শান্তিনিকেতনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী ও মানবিক চিন্তাশীল।
শিক্ষাজীবনের সূচনা
১৯৪১ সালে তিনি ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি’স স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। দেশভাগের পর পরিবার-সহ ভারতে চলে আসেন এবং ভর্তি হন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে। ১৯৫৩ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। পরবর্তীতে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে উচ্চশিক্ষা নিতে যান। ১৯৫৬ সালে প্রথম শ্রেণিতে বিএ (অনার্স) ডিগ্রি পান। আর, ওই বছরই কেমব্রিজ মজলিসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
আরও পড়ুন- মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারির গোপন ইতিহাস! পিছনে কি সুড়ঙ্গ?
অমর্ত্য সেন ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান। তিনি দুর্ভিক্ষ, মানব উন্নয়ন, জনকল্যাণ অর্থনীতি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ওপর তাঁর গবেষণার জন্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাঁর 'সক্ষমতা তত্ত্ব বা ক্ষমতাভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি' (Capability Approach) তত্ত্ব আজও মানব উন্নয়ন সূচকের (HDI) অন্যতম ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।
আরও পড়ুন- রাসযাত্রা ৪ নাকি ৫ নভেম্বর, কবে? পূর্ণিমা তিথি শুরু ও শেষ হওয়ার সময় কখন জানুন
১৯৯৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান 'ভারতরত্ন' প্রদান করেছে। এছাড়া তিনি পেয়েছেন ১২০টিরও বেশি সম্মানসূচক ডিগ্রি এবং পুরস্কার। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, তিনিই প্রথম অ-আমেরিকান নাগরিক, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হিউম্যানিটিস মেডেল পেয়েছেন।
আরও পড়ুন- উত্তরবঙ্গের প্রাচীনতম জাগ্রত কালীমন্দির, বয়রায় আজও বাজে মায়ের নুপুরের ধ্বনি
অমর্ত্য সেন শিক্ষকতা করেছেন বিশ্বের নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলোতে, যেমন— হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স, দিল্লি স্কুল অব ইকোনমিক্স, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (MIT), স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফর্নিয়া বার্কলে। তাঁর ছাত্রদের অনেকে আজ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ এবং নীতিনির্ধারক হিসেবে কাজ করছেন।
আরও পড়ুন- একদিনেই দেখে ফেলুন নদিয়ার নবদ্বীপের সেরা দর্শনীয় স্থানগুলি
অমর্ত্য সেন শুধু অর্থনীতির ছাত্রদের কাছে নয়, মানবিক চিন্তার প্রতীক হিসেবেও পরিচিত। তাঁর লেখায় বারবার উঠে এসেছে— 'Development is freedom' অর্থাৎ, উন্নয়ন মানেই স্বাধীনতা। এই দর্শনেই তিনি মানব উন্নয়ন সূচকের তাত্ত্বিক ভিত্তি গড়ে তুলেছেন। আজও অমর্ত্য সেন মানবিক সমাজব্যবস্থার পক্ষে সরব কণ্ঠস্বর। তাঁর মতে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেবল সংখ্যায় নয়, সমতার মাপকাঠিতেও মূল্যায়ন করা উচিত। অর্থনীতির পাশাপাশি দর্শন, নীতি-রাজনীতি ও শিক্ষার ক্ষেত্রেও তাঁর প্রভাব গভীর। তাঁর জন্মদিনে দেশজুড়ে গবেষক, ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us