/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/09/melai-chandi-temple-1-2025-10-09-17-01-59.jpg)
Melai Chandi Temple: মেলাইচণ্ডী মন্দির।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/09/melai-chandi-temple-2-2025-10-09-17-02-11.jpg)
অলৌকিক শক্তিতে পূর্ণ মন্দির
Hindu Temple: হাওড়া জেলার আমতা আজ এক বর্ধিষ্ণু জনপদ, তবে এর পরিচয় শুধুমাত্র প্রশাসনিক নয়। এই জনপদেই রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন, অলৌকিক শক্তিতে পূর্ণ মেলাইচণ্ডী দেবীর মন্দির। স্থানীয়দের কাছে তিনি শুধু দেবী নন, তিনি 'জগৎমাতা'— সবার দুঃখে-সুখে আশ্রয়দাত্রী দেবী।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/09/melai-chandi-temple-3-2025-10-09-17-02-35.jpg)
সতীপীঠ হিসেবে মেলাইচণ্ডীর মাহাত্ম্য
অনেকে জানেন না, এই মন্দির আসলে একটি সতীপীঠ। পুরাণ অনুসারে, এখানে দেবী সতীর পায়ের মালাইচাকি পতিত হয়েছিল। সেই থেকেই দেবীর নাম হয়েছিল 'মালাই চণ্ডী', যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়ে আজকের 'মেলাই চণ্ডী' নাম নিয়েছে। এখানে দেবীর এই রূপটি ভিন্নধর্মী— পূর্ণাঙ্গ মূর্তি নয়, বরং মালাইচাকির প্রতিরূপে দেবী এখানে বিরাজমান। দেবীর বাহু ও পদযুগল নেই, যা এই মন্দিরের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/09/melai-chandi-temple-3-2025-10-09-17-03-07.jpg)
প্রথমে মেলাইচণ্ডীর আসন ছিল হাওড়ার জয়ন্তী গ্রামে
শোনা যায়, প্রাথমিকভাবে দেবী মেলাইচণ্ডীর আসন ছিল হাওড়ার জয়ন্তী গ্রামে। পরবর্তীতে এক ব্রাহ্মণ— জটাধারী চক্রবর্তী — দেবীকে আমতায় নিয়ে এসে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর ১৬৪৯ খ্রিষ্টাব্দে, কলকাতার হাটখোলার বিখ্যাত লবণ ব্যবসায়ী কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত দেবীর জন্য নির্মাণ করান একটি আটচালা মন্দির। এটি আজও দাঁড়িয়ে আছে হাওড়ার প্রাচীনতম মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম হিসেবে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/09/melai-chandi-temple-5-2025-10-09-17-04-20.jpg)
চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে উল্লেখ
দেবী মেলাইচণ্ডীর মাহাত্ম্য এতটাই প্রসিদ্ধ ছিল যে কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী তাঁর অমর রচনা চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে এই দেবীর উল্লেখ করেছেন। এই সাহিত্যিক উল্লেখই প্রমাণ করে মন্দিরটির প্রাচীনত্ব এবং দেবীর বিস্তৃত প্রভাব ঠিক কতটা।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/09/melai-chandi-temple-6-2025-10-09-17-04-52.jpg)
নিত্যপূজা ও আরতি
সারাবছর এই মন্দিরে দেবীর নিত্যপূজা ও আরতি অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিশেষ গুরুত্ব পায় বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বৈশাখী পূর্ণিমা দিনটি। এই দিনটি দেবীর প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবেই পালিত হয়। এদিন বসে বিশাল মেলা, যা শুধু ধর্মীয় আচার নয় — এক সামাজিক মিলনক্ষেত্র করে তোলে এই মন্দির চত্বরকে। বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন, কেউ গরুর দুধ দিয়ে পূজা দেন, কেউ মানত করেন। ছোট-বড় সবাই মেতে ওঠেন দেবীর উৎসবে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/09/melai-chandi-temple-7-2025-10-09-17-05-37.jpg)
জেলার বড় উৎসব
বৈশাখী পূর্ণিমার এই মেলা শুধু আমতাবাসীর নয়, পুরো হাওড়া জেলার এক বড় উৎসব। স্থানীয়রা মনে করেন যে, এই মেলা থেকে কেউ খালি হাতে ফেরেন না। এখানে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসঙ্গে অংশ নেন, কেউ দেবীর দর্শন করতে আসেন। কেউ আসেন মেলার আনন্দে। সম্প্রীতির এই রঙিন চিত্রই মেলাইচণ্ডী মেলার প্রকৃত সৌন্দর্য।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/09/melai-chandi-temple-8-2025-10-09-17-06-22.jpg)
আমতার প্রধান রাস্তায় মন্দির
বর্তমান মন্দিরটি আমতার প্রধান রাস্তায় অবস্থিত, হাওড়া স্টেশন থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। বাস, ট্রেন বা প্রাইভেট গাড়িতে সহজেই পৌঁছানো যায়। মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্তদের জন্য রয়েছে প্রসাদ বিতরণ, বিশ্রামস্থান এবং পূজা সামগ্রীর দোকান। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, মা মেলাইচণ্ডী অত্যন্ত জাগ্রত দেবী। ভক্ত যদি মন থেকে কিছু চান, দেবী তাঁর মানত পূরণ করেন। অসুস্থতা, মানসিক কষ্ট বা আর্থিক সমস্যা — যে কোনও বিপদে দেবীই ভক্তদের ভরসা।