সিদ্ধিদাতা গণেশ। সিদ্ধিদাতা কথার অর্থই হল, কোনও কিছু সিদ্ধ করতে হলে, অর্থাৎ পূরণ করতে হলে তাঁর কৃপা প্রয়োজন হয়। আবার শাস্ত্রমতে তিনিই বুদ্ধির দেবতা। বিদ্যা থেকে যে কোনও প্রকার শাস্ত্র, কোনওকিছুই তাঁর কৃপা ছাড়া হয় না। সেই কারণে হিন্দু শাস্ত্রে সিদ্ধিদাতার কদর বরাবরই। এমনকী, বাংলা বছরের শুরুতেও তাঁর আরাধনা করেই বছর শুরু করা হয়। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, তাই সিদ্ধিদাতা সর্বজনশ্রদ্ধেয়।
এদেশে পশ্চিম ভারতে বিশেষ করে মহারাষ্ট্রে গণেশ বা গণপতির বিশেষ আরাধনার চল আছে। সেখানে বেশ বড় আকারে গণেশের পুজো করা হয়। ১০ দিন চলে গণেশ উৎসব। শুধু তাই নয়, মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় সিদ্ধিদাতা গণেশের মন্দির আছে। যার মধ্যে প্রধান হল সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির। যে মন্দির দর্শন করতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা যান। মানত করেন, পূরণও হয় বলেই দাবি ভক্তদের।
দেশের অন্যান্য রাজ্যের মত পশ্চিমবঙ্গ থেকেও বহু মানুষ প্রতিবছর মহারাষ্ট্রের সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরে যান। বিশেষ পুজো দেন। দর্শনের সঙ্গে গণেশের কৃপা লাভের জন্যও প্রার্থনা করেন। কিন্তু, এই ভক্তদের অনেকেই জানেন না, শুধু মুম্বইয়েই নয়। তাঁদের প্রাণের শহর কলকাতাতেও সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির আছে। শুধু আছে বলা ভুল। সেই মন্দিরও বেশ প্রাচীন আর যথেষ্ট বড়।
আরও পড়ুন- বিখ্যাত রাজাকাটরা হনুমান মন্দির, বিপদে পড়লে যেখানে ছুটে যান বড়বাজারের ব্যবসায়ীরা
রীতিমতো রাজপ্রাসাদের মত এই মন্দির রয়েছে উত্তর কলকাতার মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে। এমজি রোড মেট্রো স্টেশন থেকে ২ নম্বর গেট ছেড়ে এগিয়ে বাঁ দিকে যেতে হবে। সেখানে পরপর তিনটি গলি রয়েছে, তার মধ্যে তৃতীয় গলিতে এই মন্দির। শ্বেতপাথরের তৈরি এই মন্দিরে রয়েছে বড় আকারের ঝাড়বাতি, ঠাকুর দালান। প্রতিদিন রাত ৮টা পর্যন্ত এই মন্দিরে পুজোপাঠ চলে।
শহর কলকাতার অনেকেই বংশ পরম্পরায় এই মন্দিরে যাতায়াত করেন। তাঁদের দাবি, এই মন্দিরের সিদ্ধিবিনায়ক বা গজানন বা গণেশ- যে নামেই তাঁকে ডাকুন না-কেন, দেবতা অত্যন্ত জাগ্রত। আর, তাঁর কাছে প্রার্থনা করলে অচিরে সেই প্রার্থনা পূরণও হয়।