গা হাত পায়ে ব্যাথা এখন সব বয়সের মানুষের মধ্যেই খুব সাধারণ বিষয়। এবং এর থেকে রেহাই পেতেই চিকিৎসকরা স্টেরয়েড এবং নন স্টেরয়েড দুই ধরনের ওষুধের কথাই বলে থাকেন, আদৌ এটা কতটা কাজ করবে নাকি শরীরের অন্যান্য কিছুর মুশকিল ঘটাবে সেই নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েই যাবে, তাঁর অন্যতম কারণ স্টেরয়েড সবার পক্ষে সঠিক নয়। Rheumatoid Arthritis শরীরের অটো ইমিউন অবস্থার এক নিদর্শন - এবং এই জাতীয় ওষুধগুলি কেবলমাত্রই শরীরের ব্যাথা এবং প্রদাহ কম করে, কিন্তু প্রথম ধাপে আদৌ কেন প্রদাহ সৃষ্টি হয় সেই বিষয়ে নজর দেয় না।
প্রসঙ্গে আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ, এবং চিকিৎসক মার্ক হেইমন বলছেন আগে ব্যাথা কমানোর সঙ্গে সঙ্গেই কেন অতিরিক্ত প্রদাহ সৃষ্টি হচ্ছে সেইদিকে নজর দেওয়া খুব দরকার। সব মানুষের জেনেটিক বিশ্লেষণ এক নয়। তাদের প্রত্যেকের চিকিৎসা আলাদা। একটি উত্তেজিত ইমিউন সিস্টেমের ফলে প্রদাহ হয় এবং আমাদের ইমিউন সিস্টেমের প্রায় ৭০ শতাংশ আমাদের অন্ত্রের সঙ্গে জরিয়ে থাকে। তাই আন্ত্রিক গাফিলতি জাতেনা হয় সেদিকে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। অনেক সময় সেই আন্ত্রিক গোলমালেই ডিসবায়সিস নামক এক ব্যাকটেরিয়া ভুমিকা নেয়, যেই কারণেই অন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তিনি বলছেন, এটি আসলেই ঘটতে পারে খাবারের ভারসাম্যহীনতা এবং খারাপ খাদ্যাভ্যাসের ওপর ভিত্তি করে। ডিসবায়োসিস আমাদের অন্ত্রের আস্তরণের ক্ষতি করে তাই ব্যাকটেরিয়া এবং এন্ডোটক্সিন সহজেই এর মধ্য দিয়ে যেতে পারে। আমাদের জয়েন্টগুলিতে গিয়ে এমনভাবে আঘাত করে যে, ইমিউন সিস্টেমকে বিভ্রান্ত করে এবং এটির আশেপাশের টিস্যুকে আক্রমণ করে। তাই তিনটি এমন পদ্ধতির কথা তিনি উল্লেখ করেছেন যার থেকে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই আর্থ্রাইটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সেগুলি কী কী?
অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ডায়েটের খাবার খেতে হবেঃ খাবারে যুক্ত করতে হবে ফল, সবজি - বিশেষ করে টক জাতীয় ফল। লো গ্লাইসেমিক ফল তথা বিভিন্ন ধরনের বেরি এবং ফাইবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এক্কেবারে বন্ধ করে দিতে হবে চিনি এবং প্যাকেট জাতীয় খাবার। সবজি থেকে প্রাপ্ত তেল কমিয়ে দিতে হবে, এগুলি ভালভাবে রিফাইন নয়। এছাড়াও কার্ব জাতীয় খাবার একটু ভেবে চিন্তেই খাওয়া উচিত। স্যাচুরেটেড ফ্যাট যেমন ওমেগা থ্রি এবং প্রাকৃতিক ভাবে প্রাপ্ত মাংস, ডিম এবং ফ্যাটি ফিশ এগুলো বেশ আবশ্যিক। প্র-বায়টিক খাবার আপনার জন্য ভাল প্রমাণিত হতে পারে।
গ্রহণ করতে হবে বেশ কিছু সাপ্লিমেন্টসঃ খাবারের সঙ্গে সঙ্গেই সাপ্লিমেন্টস কিন্তু দারুণ কাজে দেবে। যদিও বা খাবারের থেকে ভাল কিছুই হয় না, কিন্তু তারপরেও ভিটামিন ডি থ্রি, এবং কে টু খুব ভাল কাজ করতে পারে। বলা উচিত ভিটামিন ডি ক্যালসিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং হাড়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও এর সঙ্গে সম্পর্কিত আলসার এবং প্রদাহ কম করতেই ভিটামিন সি বেশ কার্যকরী।
মোবিলিটিঃ শুধুই ভেতর থেকে সুস্থ থাকলে হবে না। ব্যাথা বেদনা কমাতে বেশ কিছু বাহ্যিক পন্থা নেওয়াও ভাল। কিছু শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ট্রেনিং, স্ট্রেচ, ব্যায়াম এগুলি করা উচিত। মাসেলের ওপর কাজ করলে বেশ সুবিধা, ট্রেনার দিয়ে কাজ করলে অনেক ভাল হবে।