দুর্গাপুজোর অষ্টম দিন আজ দেবীকে পুজো করা হচ্ছে মহাগৌরী রূপে। দেবী শ্বেতবর্ণা। তাঁর আগমন যেন রাতের পর দিনের আলো আসার মত। সপ্তমীতে দেবী কালরাত্রির পুজোর পর, অষ্টমীতে তেমন ভাবেই যেন আগমন ঘটে দেবী মহাগৌরীর। চতুর্ভুজা দেবী। তাঁর ডান দিকের এক হাতে থাকে ত্রিশূল। অন্য হাতে অভয়মুদ্রা। বাম দিকের ওপরের হাতে ধরা ডমরু। অন্য হাতে বরাভয় শোভা পায়।
দেবীর বসন শুভ্র। মূর্তিভেদে তিনি কোথাও একহাতে পদ্মফুল ধরে রাখেন। অন্য হাতে ধরে রাখেন জপমালা। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, দেবী কালী ব্রহ্মাকে তপস্যায় তুষ্ট করেছিলেন। ব্রহ্মার আশীর্বাদেই তিনি মানস সরোবরে স্নান করেছিলেন। ঘোর কৃষ্ণবর্ণা থেকে হয়ে উঠেছিলেন মহাগৌরী। দেবীর বাহন ষাঁড়। বারাণসীতে কাশী অন্নপূর্ণার মন্দিরটি দেবী মহাগৌরীর মন্দির নামেও পরিচিত।
দেবী দুর্গার নয়টি নাম দিয়েছিলেন প্রজাপতি ব্রহ্মা। চণ্ডীতে রয়েছে, ‘স্ত্রিয় সমস্তাঃ সকলাজগৎসু’। অর্থাৎ, জগতের সব স্ত্রীই দেবীর অংশ। আর গৌরী সম্পর্কে বলা হয়, 'অষ্টমবর্ষা ভবেদ গৌরী'। যার অর্থ, দেবী বালিকারূপিণী। দেবীর এই রূপের স্মরণ, মনন ও পুজো এবং আরাধনা করলে ভক্তের সার্বিক কল্যাণ হয়। সমস্ত কলুষ নাশ হয়। পূর্বে সঞ্চয় করা পাপ ধুয়ে যায়। ভবিষ্যতেও দুঃখ, দৈন্যতা এবং পাপের তাপ তাঁকে স্পর্শ করে না। সেই ভক্ত সবরকম পবিত্র এবং অক্ষয় পুণ্যের অধিকারী হন। যে মন্ত্রের মাধ্যমে মহাগৌরীর বন্দনা করা হয়, তা হল- 'শ্বেত বৃষ সমারূঢ়া শ্বেতাম্বর ধরা শুচিঃ, মহাগৌরী শুভং দধান্মহোদৈ ব প্রমোদ্দা। যা দেবী সর্বভূতেষু মা মহাগৌরী রূপেন সংস্থিতা। নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ।।'
আরও পড়ুন- অষ্টমীতে পুজোর ঘনঘটা, কুমারী থেকে সন্ধি, একের পর এক পুজো, জানুন বিস্তারিত
কথিত আছে হিমালয়কন্যা পার্বতী ভগবান শিবকে স্বামীরূপে পাওয়ার জন্য কঠোর তপস্যা শুরু করেছিলেন। যেখানে তিনি তপস্যা করেছিলেন, সেই জায়গাটি হল- হরিদ্বারের প্রান্তে পাহাড়ি ঢালে জঙ্গলে ঘেরা বিল্বকেশ্বর মহাদেব মন্দির। ভক্তদের একাংশের বিশ্বাস, মানস সরোবর নয়। মহাদেব গঙ্গাজল দিয়ে দেবীকে স্নান করিয়েছিলেন। তারপরই দেবী গৌরবর্ণা হয়ে উঠেছিলেন। পরিচিত হয়েছিলেন দেবী মহাগৌরী নামে।