আমরা যা কিছু বুঝতে পারি না, তা নিয়ে মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে। সেই রকমই একটা বিষয় অটিজম। মানসিক এই অবস্থা নিয়ে যারা খুব কিছু জানিনা, তাঁদের মধ্যে অটিজম আক্রান্তদের ভাষা, কথা বলা, সব কিছু নিয়েই অনেক জিজ্ঞাসা থাকে।
শিশুদের মানসিক বিকাশজনিত সমস্যার ক্ষেত্রে আচরণগত অসুবিধা দেখা যায় আকছার। ভাব প্রকাশে সমস্যা হয় এদের। সামাজিক দক্ষতাগুলো সীমিত হয় এদের। ধরুন, প্রিয়জনের খারাপ কোনও খবর আপনি টিকে দিলেন। শিশুটি অটিজিমে আক্রান্ত। এবার শোক সংবাদ শুনেও শিশুটির কোনও প্রতিক্রিয়া দিল না। এছাড়া চোখে চোখ রাখতে চায় না এই শিশুরা।
অনেক বাচ্চা একসঙ্গে হৈচৈ করছে, সেরকম জায়গা এদের একেবারে অপছন্দের। একা থাকতেই স্বচ্ছন্দ এরা। সমস্যার পোশাকি নাম অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার (এএসডি)। একে এরা নিজেরাই একলা থাকা পছন্দ করে, তার ওপর এদের আচরণগত ভিন্নতার জন্য আমরাও এদেরকে দূরে সরিয়ে রাখি। ওরা আমাদের থেকে আলাদা, এই চিন্তাটাই আসলে কাছে আসতে দেয়না দু'পক্ষকে।
আরও পড়ুন,ব্যথাহীন জীবনের আখ্যান ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের
আমাদের সন্তানেরা সমাজের ঠিক করে দেওয়া সংজ্ঞা অনুযায়ী সুস্থ হলে আমরা তাদের নিয়ে মাতামাতি করি। বড় হওয়ার প্রতিটা ধাপ ক্যামেরাবন্দি করে রাখতে চাই। কী বক বক করল, ছোট মুখে আধো আধো করে কোন পাকা পাকা কথাটা বলল, তা বড়াই করতে চাই। নেচে দেখাও তো, গেয়ে শোনাও তো, বলে বলে তিতিবিরক্ত করে দিই খুদেটাকে। অথচ তার মানসিক গঠন আর পাঁচটা বাচ্চার তুলনায় অন্যরকম হলে সেদিকে কারোর দৃষ্টি পড়ুক, তা চাই না। তাই তার সমস্ত কার্যকলাপ, আচরণ লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে যায়। কিছু ক্ষেত্রে এটি খুবই বিপজ্জনক। এতে কী হয়, আমাদের সন্তানের যে চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে, তা কেউ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার সুযোগটাই পায় না।
সমস্যা এখানেই। আমরা বুঝতে পারছি, সব কিছু স্বাভাবিক নেই, কিন্তু ওই, যা কিছু বুঝতে পারি না, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে। এবং বিষয়টি থেকে ততই দূরে সরে যেতে চাই আমরা। অটিজম পুরোপুরি সারানো সম্ভব না, কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে যথাযথ চিকিৎসায় একটা স্বাভাবিক সুস্থ জীবন যাপন করতে পারে শিশুরা।
Read the full story in English