শহর কলকাতা। যে শহর থেকে বহু মানুষই দূর-দূরান্তে ছুটে যান একঘেয়েমি কাটাতে। কেউ যান পাহাড়ে। কেউ যান সমুদ্র দর্শনে। কেউ বা অন্য কোথাও। আবার ধর্মের প্রতি ভক্তিভাব থেকেও এই শহর কলকাতারই বহু মানুষ নানা জায়গায় ছুটে যান। লক্ষ্য থাকে ভগবানের কৃপালাভ। কিন্তু, তাঁদের বেশিরভাগই খোঁজ রাখেন না, এই শহরে ঠিক কী সম্পদ লুকিয়ে আছে, তা-র। আসলে বলতে গেলে, কলকাতা শহর যেন আস্ত পেঁয়াজ। যার খোসা ছাড়াতে শুরু করলে বোঝা যায়, ঠিক কতগুলো খোসার আড়ালে তা রয়েছে।
Advertisment
আর, অনেকটা যেন সেরকমই এই শহরের ধর্ম আরাধনা। অনেকে বলেন, কলকাতার রক্ষাকর্ত্রী দেবী কালী। সত্যিই তো! এই শহরে রয়েছে সতীপীঠ। শহরের অলিগলিতে রয়েছে কালীমন্দির। রয়েছে শক্তি আরাধনার কেন্দ্র। কিন্তু, তার সঙ্গে এই শহরেই রয়েছে বহু জাগ্রত মন্দির। যেখানে কিন্তু, অন্যান্য দেব বা দেবীর পুজো হয়। সেই খবর কিন্তু খুব কম লোকই রাখেন। তবে, যাঁরা রাখেন, তাঁরা অবশ্য নিয়মিত যাতায়াত করেন সেই সব মন্দিরে। শহর কলকাতার এমনই এক মন্দির হল বৈকুণ্ঠনাথ মন্দির। নামের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে, এখানে কোন দেবতার আরাধনা হয়।
নতুন কোনও গজিয়ে ওঠা মন্দির নয়। শহর কলকাতার বুকে এই মন্দির তৈরি হয়েছিল ৮২ বছর আগে। মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন মহারাজ রেবতী নারায়ণ তিওয়ারির ছেলে মহারাজ প্রয়াগ নারায়ণ তিওয়ারি। দক্ষিণ ভারতীয় মন্দিরের আদলে তৈরি এই মন্দিরের প্রধান বিশেষত্ব, এখানে এলে ভক্তদের মন শান্ত হয়ে ওঠে। কলকাতার কোথায় এমন মন্দির? একেবারে খাস কলকাতায় রয়েছে এই মন্দির। জায়গাটা জোড়াসাঁকো। হুগলি নদীর ধারে। দেখলে মনে হবে বোধহয় কলকাতা না। দক্ষিণ ভারতের কোনও মন্দিরে চলে এসেছেন। অবিকল সেরকম।
মন্দিরের গর্ভগৃহের দুই পাশে রয়েছে শ্রীদেবী ও ভূদেবীর মূর্তি। আর, রয়েছে বৈকুণ্ঠনাথ শ্রীকৃষ্ণের পাথরের মূর্তিও। মন্দিরের ভিতরটা সাদা মার্বেলে তৈরি। এখানে আছে দর্শনার্থীদের বসার জায়গাও। কথিত আছে, এই মন্দিরে ভগবান অত্যন্ত জাগ্রত। ভক্তদের তিনি নিরাশ করেন না। ভক্তদের প্রার্থনা অচিরেই পূর্ণ করেন।