ভগবান শিবশংকর। যাঁর কৃপায় অনেক অসম্ভব সম্ভব হয়ে ওঠে। অনেক আশঙ্কা দূর নয়। বহু সম্ভাবনা বাস্তব হয়ে ওঠে। তাই শিবের পূজা যুগ যুগ ধরে ভারতে চলে আসছে। এই বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানকার বিভিন্ন অঞ্চলে বহু শিবমন্দির আছে। যা বিপন্ন স্থানীয় মানুষের ভরসার অন্যতম কারণ। এই সব শিব মন্দিরের অনেকগুলোর নামই সাধারণ মানুষ জানেন না। যদিও বা কোনও ভক্তের কাছে শুনতে পান, জানতে পারেন, তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেখানে ছুটে যান।
এমনই এক শিবমন্দির রয়েছে শহর কলকাতায়। এই মন্দির রয়েছে বিধান সরণির ওপর শ্রীমানী বাজারের কাছে তারক প্রামাণিক রোডে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই মন্দিরকে ডাকেন বালকনাথ মন্দির ও সীতানাথ শিব মন্দির নামে। বছরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই মন্দিরে ভিড় করেন শিবভক্তরা। বিশেষ ভিড় হয় শ্রাবণ মাসে। পাশাপাশি চৈত্র মাসেও ভিড় হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, এই মন্দিরের শিবলিঙ্গ অত্যন্ত জাগ্রত। যাঁকে কাতর স্বরে ডাকলে সমাধান হয় বহু সমস্যার।
এই মন্দিরটি দেখভাল করেন কংসবণিক সম্প্রদায়। বহু প্রাচীন এই মন্দির তৈরি হয়েছিল ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে। বাংলা সন ১৩০৭ বঙ্গাব্দ। সেই যুগে ২৮ আষাঢ় এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তিনি হলেন কংসবণিক সম্প্রদায়ের স্বর্গীয় মধুসূদন কুণ্ডুর স্ত্রী বামাসুন্দরী দাসী। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাফলকে আজও তাঁর নাম লেখা রয়েছে। এই মন্দিরটি বেদির ওপর তৈরি। পূর্বমুখী এই শিবমন্দির নবরত্ন শৈলীর। এর কার্নিস সোজা। গর্ভগৃহের সামনে রয়েছে বড় অলিন্দ। যাতে ভক্তদের সংখ্যা বেশি হলেও তাঁদের অপেক্ষা করতে কোনও অসুবিধা না-হয়।
আরও পড়ুন- শহর কলকাতায় অপূর্ব পুরোনো মন্দির, ভক্তরা ছুটে আসেন জাগ্রত দেবতা কালাচাঁদের কাছে
গর্ভগৃহের দরজার খিলানের স্তম্ভগুলোর প্রতিটিই গোল ও সরু। গর্ভগৃহে রয়েছে দুটি শিবলিঙ্গ বালক ও সীতানাথ। দুটি শিবলিঙ্গই ছোট আকারের। কিন্তু, জাগ্রত এই লিঙ্গদুটির নিত্যপুজো হয়। পুজোয় যাতে কোনও খামতি না-থাকে, সেদিকেও থাকে বিশেষ নজর। কংসবণিক সম্প্রদায় তাঁদের ব্যবসা থেকে অন্যান্য কাজকর্মে অসুবিধায় পড়লে এই মন্দিরে পুজো দেন। সমস্যা কেটে যায় বলেই তাঁদের বিশ্বাস।