ভক্তরা তাঁকে ডাকেন বড়মা বলে। ভক্তদের কথা অনুযায়ী, তিনি জীবন্ত বড়মা। আসলে তিনি হলেন মা কালী। ভক্তদের দাবি, দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। তিনি সংকীর্তন শোনেন। আর, সংকীর্তন শুনতে বেশ ভালোবাসেন। ভক্তদের এই বিশ্বাস কিন্তু, আপনা থেকে তৈরি হয়নি। বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে ভক্তদের মনে এমন বিশ্বাসের জন্ম হয়েছে। কী সেই ঘটনা? এখানে দেবীর অর্থাৎ বড় মা-র মন্দিরের সামনে একটা সময় নিয়মিত সংকীর্তন হত। মধ্যে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ভক্তদের দাবি, সেই সময় দেবী স্বয়ং আবির্ভূত হয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে সংকীর্তন ভালোবাসেন। তিনি সংকীর্তন শুনতে চান। সংকীর্তন বন্ধ হলেই নাকি দেবীর হাত কাটা অবস্থায় পড়ে থাকত মন্দিরের সামনে সংকীর্তনের স্থানে। তাই ফের এখানে সংকীর্তন চালু করেছেন ভক্তরা। দেবীর সংকীর্তন প্রিয় বলে তাঁকে বৈষ্ণব কালীও বলা হয়। ভক্তদের দাবি, দেবী যে জীবন্ত, তার বহু প্রমাণ আছে। প্রতিদিন দুপুর হলেই গোটা মন্দির চত্বরের সামনের অংশটা ধূপ-ধুনোর গন্ধে ভরে যেত। যাতে তাঁরা বুঝতে পারেন দেবী বেড়াতে বেড়িয়েছেন।
এই পুজোর প্রচলন নিয়েও রয়েছে এক অলৌকিক কাহিনি। একটা সময় মন্দিরের পাশেই ছিল বিরাট এক অশ্বত্থ গাছ। তার পাশেই ছিল পঞ্চমুণ্ডির আসন। কাছেই নদী। তার ঘাটের দিকে একবার সেবায়েত পরিবারের একজন যাচ্ছিলেন। তখন দেখেন কাছেই এক জায়গা থেকে আসছে ধূপ-ধুনোর গন্ধ। আচমকা এক কাপালিক এসে ওই ব্যক্তির সামনে দাঁড়ায়। তাঁর হাতে দেবীর মূর্তিটি দেন। আর, দেবীকে পুজো করার নির্দেশ দেন। আচমকা এমন ঘটনায় ওই ব্যক্তি যখন হতচকিত, সেই সময় দেখেন ওই কাপালিক কোথাও যেন উধাও হয়ে গেছেন।
আরও পড়ুন- ঐতিহ্যবাহী কালী মন্দির, কামনা করলে সন্তান হয়, বিশ্বাস ভক্তদের
ভক্তদের দাবি, জাগ্রত দেবী বড়মা মনস্কামনা পূরণ করেন। ভক্তরা প্রার্থনা করলে তিনি খালি হাতে ফেরান না। এই মন্দিরে যেতে হলে প্রথমে দুর্গাপুর স্টেশনে যেতে হবে। সেখান থেকে ধরতে হবে বিষ্ণুপুরগামী বাস। সেই বাসে চেপেই নামতে হবে পলাশডাঙা গ্রামে। বাসস্ট্যান্ড থেকে হেঁটে বা টোটোয় চেপে যাওয়া যাবে দেবীর মন্দিরে।