পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস জমানা থেকেই অলিগলিতে শনিপুজোর দারুণ চল। তার মধ্যে অনেক মন্দিরই আছে, যা অত্যন্ত জাগ্রত। আর, শনিদেব নিজেও ভীষণ জাগ্রত। কথায় বলে, তিনি কাউকে ছাড়েন না। আর, অসম্ভব পীড়া দেন। এটা জ্যোতিষ থেকে শুরু করে গুরুজনদের অনেকেই বলে থাকেন। কিন্তু, সেই শনিদেবও কিন্তু তাঁর ভক্তদের প্রতি অসম্ভব দয়ালু। তাঁর কৃপাধন্য ভক্তের সংখ্যা এই পশ্চিমবঙ্গেই কিন্তু, নেহাত কম নেই।
তবে, সেই কৃপা পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি পালন করতে হয়। না-হলেই কিন্তু শনিদেব রুষ্ট হন। এমনটাই লোকমুখে প্রচারিত। তবে, এই পশ্চিমবঙ্গেই কিন্তু এমন বেশ কিছু মন্দির রয়েছে, যেখানে শনিদেব অত্যন্ত ভক্তবৎসল। সাধারণত, ভক্তদের দেখা যায় শিব, কালী, লক্ষ্মী, হনুমান বা অন্যান্য দেব-দেবীদের আরাধনা করতে। অর্থাৎ যেখানে তাঁদের মনস্কামনা পূরণ হয়, বেছে এমন মন্দিরেই যান ভক্তরা। বেছে এমন দেবতাদেরই তাঁরা উপাসনা করেন।
কিন্তু, জাগ্রত কিছু মন্দিরে সেই ভক্তরাই যান কেবলমাত্র শনিদেবেরই জন্য। তাঁর কৃপাভিক্ষার জন্য। যাতে যাবতীয় অশান্তি ও বাধা কেটে যায়। সঙ্গে, শান্তি আর সুখ আসে জীবনে। এমনই এক মন্দির রয়েছে হাওড়ার বাঁধাঘাটে। এই মন্দির অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী। আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে এই শনি মন্দির তৈরি হয়েছিল। যাকে পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে পুরোনো শনি মন্দির বলেই মনে করেন ভক্তরা।
আরও পড়ুন- রোগ-ব্যাধি থেকে যে কোনও বিপদ, অসহায় ভক্তদের আশ্রয় হাওড়ার খলিশানি বুড়িমা
বাঁধাঘাটের এই জাগ্রত শনি মন্দিরের প্রথম প্রতিষ্ঠা ও বিগ্রহ স্থাপন করেছিলেন লক্ষ্মীনারায়ণ চক্রবর্তী। বংশপরম্পরায় তাঁর বংশের পরবর্তী ছয় পুরুষ এই মন্দিরের সেবায়েতের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখানে শনিদেবের বিগ্রহ ধূসরবর্ণ। শকুনের ওপর দাঁড়ানো মূর্তিটির ওপরের ডানহাতে রয়েছে তির। নীচের ডানহাতে রয়েছে পদ্ম। ওপরের বামহাতে রয়েছে ধনুক। আর, নীচের বামহাতে রয়েছে গদা। মাটির তৈরি এই বিগ্রহের উচ্চতা পাঁচ ফুট। মাথার মুকুট নির্মিত হয়েছে দক্ষিণ ভারতের আদলে। এই মন্দিরের সম্পর্কে ভক্তরা বলে থাকেন, গ্রহরাজ যেন প্রাণভরে ডাকলে মনের কথা শোনেন। মনস্কামনা হাতেনাতে পূরণ হয়।