Premium: Surjya Modok Talsash: এই মিষ্টি খেয়ে নাজেহাল অবস্থা বাড়ির জামাইদের, সূর্য মোদকের 'তালশাঁসের' ইতিহাস জানেন?

Surjya Modok Talsash: বাংলার মিষ্টির ইতিহাসে সূর্য মোদকের তৈরি তালশাঁস বিখ্যাত। বহু বিশিষ্ট মানুষ চেখে দেখেছেন এই মিষ্টি, তাঁরাও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

Surjya Modok Talsash: বাংলার মিষ্টির ইতিহাসে সূর্য মোদকের তৈরি তালশাঁস বিখ্যাত। বহু বিশিষ্ট মানুষ চেখে দেখেছেন এই মিষ্টি, তাঁরাও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
surjya modok taalsash- sweet

সূর্য মোদকের তালশাঁস

Surjya Modok Talsash: বাংলার নানা প্রান্তের মিষ্টির (sweets of bengal) সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা ধরনের ইতিহাস। উৎসব অনুষ্ঠানে কিংবা প্রেম অথবা বিখ্যাত ব্যক্তির আগমন, মিষ্টির জুড়ি মেলা ভার। ঠিক তেমনই গ্রাম বাংলার অন্দরমহলে এমন কিছু মিষ্টির (bengal sweets) খোঁজ মেলে যেগুলির স্বাদ যেমন খাসা তেমনই এর ইতিহাস কিন্তু চমকে দেওয়ার মতো। চন্দননগর স্পেশ্যাল সূর্য মোদকের জলভরা তালশাঁস- ঠিক তেমনই একটি মিষ্টি।

Advertisment

এই মিষ্টির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন বাড়ির জামাইরা। শুনে অবাক হচ্ছেন তো? বর্তমান কর্ণধার শ্রী শৈবাল সেনের থেকেই জানা গেল এর নাটুকে ইতিহাস। মজার ছলেই তিনি জানালেন কীভাবে এই মিষ্টি জামাইষষ্ঠীর দিন নাজেহাল অবস্থা করেছিল বাড়ির জামাইদের। বললেন, "সাল তখন ১৮১৮। ঠিক জামাইষষ্ঠীর আগে আগে হঠাৎ করেই তেলেনিপাড়া বন্দোপাধ্যায় বাড়ি থেকে সূর্য মোদকের কাছে অনুরোধ আসে যে এমন এক মিষ্টি বানান যেটা দিয়ে জামাই ঠকানো যায়। তখনকার দিনে জামাইয়ের সঙ্গে বাড়ির মেয়ে বউরা একটু ঠাট্টা মশকরা করতেন। তখন সূর্য মোদকের মাথায় হাত কী বানাবেন কী বানাবেন। হঠাৎ করেই একদিন দেখতে পেলেন রাস্তায় তালশাঁস বিক্রি হচ্ছে। ব্যস! ওখানেই বুদ্ধি খেলে গেল, যে আকৃতি হবে তালশাঁসের আর ভেতরে থাকবে সিরাপ। গুড়ের পাক দেওয়া হয় এর ভেতরে, একে বেলো বলা হয়। অনেক ভাবনা চিন্তা করেই মিষ্টি বানানো হল।"

আরও পড়ুন- ফোঁটায় পাতে রাখুন এই কাটলেট, মন ভরবে ভাইয়ের!

talsash by surjya modok, chandannagar
সূর্য মোদকের জলভরা তালশাঁস

কিন্তু একে তো অনেকেই জলভরা নামেও ডাকে, এটা কেন?

শৈবাল বাবু বলেন, "মিষ্টি চেখে দেখতে গিয়েই তো আসল গল্প। বাড়িতে জামাইদের আদরে কোনও ত্রুটি নেই। প্লেট ভর্তি মিষ্টি, তবে যেই তালশাঁসে কামড় বসিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে গায়ে জামায় রস পরে একাকার অবস্থা। সেই মুহূর্তেই একজন বলে ওঠেন এ তো জলভরা মিষ্টি! সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি শুদ্ধু লোকের মধ্যে হাসির রোল। ( হেসে ) তাই তো আমিও বলি নতুন জামাই বাড়ি এলে এই মিষ্টি একবার হলেও খাওয়াবেন।"

Advertisment

আরও পড়ুন- ভাইফোঁটায় ভাইয়ের পাতে কী দেবেন? দেখুন কলকাতার এই বিশেষ খাবার

making of taalsash, surjya modok
তৈরি হচ্ছে তালশাঁস

এই মিষ্টির অনেক গুণগান, কেমন লাগে যখন এত সুনাম পান?

তাঁর বক্তব্য, "আমি সবথেকে গর্বিত মনে করি তখনই যখন ভাবি স্বয়ং রবি ঠাকুর এই মিষ্টি খেয়েছিলেন। বন্দোপাধ্যায় বাড়িতে এই মিষ্টি খাওয়ার পর তিনি উচ্ছ্বসিত হন। তাঁর চন্দননগরের বাড়িতে এই মিষ্টি অর্ডার করে নিয়ে গেছিলেন তিনি। তারপর ধরুন, অটল বিহারী বাজপেয়ীর এত ভাল লেগেছিল এই মিষ্টি যে নিজে ফোন করেছিলেন। আরেকজনের কথা না বললেই নয়, তিনি মহানায়ক উত্তমকুমার - এখান দিয়ে যখন যেতেন তখন দাঁড়িয়ে এই মিষ্টি নিয়ে গেছেন"।

আরও পড়ুন < বাংলার ‘মিষ্টি গল্প’: মাথায় নিয়ে ফেরি হত এই মিষ্টি, স্বাদে অনন্য ‘সরপুরিয়া-সরভাজা’, ইতিহাসও চমকপ্রদ >

surjya modok, oldest outlet- chandannagar
সূর্য মোদকের সবথেকে পুরনো দোকান- চন্দননগর

কীরকম দাম রয়েছে তালশাঁসের?

ওজন অনুযায়ী বিক্রি হয়। ৩৫ গ্রাম - ৫০ টাকা এটা সবথেকে ছোট। এছাড়াও ৪৫ টাকা, ৬০ টাকা আর সবথেকে বড় যেটা সেটার দাম ৯০০ টাকা। শৈবালবাবু বলেন, "ওই সাইজের মিষ্টিটা বেশিরভাগ বিয়েবাড়ি, অনুষ্ঠানে যায়"।

sweets of bengal bengal sweets