চুল নিয়ে সমস্যার যেন একেবারেই শেষ নেই। আর বেশি যেন মেয়েদের মধ্যেই এর লক্ষণ বেশি। কারওর সমস্যা রুক্ষ এবং শুষ্ক চুল তো কারওর আবার চুল পড়ার সমস্যা এমনকি তৈলাক্ত স্ক্যাল্প। নানান ধরনের বিষয় লেগেই রয়েছে। এবং এর কারণে মানুষের নানান রকম ট্রিটমেন্ট তার সঙ্গে অনেক টাকার ব্যাপার। চুল সত্যিই সুন্দর রাখা বেশ সমস্যার তবে হ্যাঁ! বেশ কিছু বিশেষজ্ঞের মতে কিন্তু চুল ঘরোয়া পদ্ধতির থেকে আর কোনও কিছুতেই ভাল থাকে না।
সুপৃথা রমেশ, স্যাস প্রোডাক্টের কর্ণধার বেশ কিছু রেমেডি সম্পর্কে উল্লেখ করেন, যেগুলি কিন্তু অবধারিত ব্যাবহার করলে আপনার সমস্যা কমবেই। তিনি বলেন, প্রাচীন যুগের ঘরোয়া রেমেডি গুলি কিন্তু যেমন জনপ্রিয় তেমনই কাজে দেবে তাই ট্রাই করতে একেবারেই ভুলো না।
গোঁড়া থেকে শক্ত চুলের জন্য দই, আমলা এবং হিবিস্কাস পাউডার : সমান পরিমাণে দই, আমলা এবং হিবিষ্কাস পাউডার মিশিয়ে একটি মসৃন পেস্ট বানিয়ে নিন। স্ক্যাল্পে লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। তারপরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। হিবিস্কাস পাউডারে অ্যামিনো অ্যাসিডের উচ্চ উপাদান একটি বিশেষ ধরনের কেরাটিন প্রোটিন তৈরি করে যা চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে। আমলকি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ যা মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে এবং চুলের ক্ষতি কমায়। দইতে ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে যা মাথার ত্বকের সংক্রমণ এবং চুল ফ্রিজ কম করতে সাহায্য করে।
মেথি এবং টক দই সিল্কি এবং স্ট্রং চুলের জন্য : পাঁচ টেবিল চামচ দই দিয়ে ভরা একটি কাপে তিন-চার টেবিল চামচ মেথি বীজ ভিজিয়ে রাখুন। সকালে এগুলোকে ব্লেন্ড করে ঘন পেস্ট তৈরি করুন এবং স্ক্যাল্পে লাগান, মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এক ঘণ্টা রাখুন এবং হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। মেথি বীজ প্রোটিন, আয়রন, ফ্লেভোনয়েডস এবং স্যাপোনিনের সমৃদ্ধ উৎস যা প্রদাহ বিরোধী প্রভাব সৃষ্টি করে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে। এছাড়াও, দই চুলের পুষ্টি দেয় এবং এটিকে আরও উজ্জ্বল এবং সিল্কি করে তোলে।
চুল পড়া কম করতে হিবিস্কাস, নারকোল তেল এবং কারি পাতা : একটি প্যানে, দুই টেবিল চামচ নারকেল তেল গরম করুন এবং ১০/১২ টি কারিপাতা এবং হিবিস্কাস পাউডার অ্যাড করুন। মিশ্রণটি ঠান্ডা হতে দিন এবং তারপরে এটি মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। ৪৫ মিনিটের জন্য এটি রেখে দিন এবং তারপর একটি হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কারি পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোটিন, বিটা ক্যারোটিন এবং আয়রন যা চুলের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে। নারকেল তেলে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন যা চুলের গঠন উন্নত করে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে।
হেনা পাউডার এবং আমলকী পাউডার চুলের পাক কম করার জন্য : দুই টেবিল চামচ আমলকি গুঁড়ো এবং চার টেবিল চামচ হেনা পাউডার মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। মাথার ত্বকে এবং চুলে ১ ঘণ্টার জন্য মাস্কটি লাগান এবং তারপরে হালকা গরম জল ও শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। হেনা প্রাকৃতিকভাবে চুল রং করে এবং পিএইচ মাত্রার ভারসাম্য বজায় রেখে সার্বিক মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। পেস্ট অতিরিক্ত তেল দূর করে যা রোমকূপ আটকে রাখে এবং চুল অকালে ধূসর হওয়া রোধ করে।
মাঝে মধ্যেই চুলে ক্যাস্টর অয়েল দিয়ে মালিশ করতে হবে : আপনার চুলের আগাগুলি পুনরায় যোগ করতে, অতিরিক্ত চুল পড়া রোধ করা এবং চুলের ঘনত্ব বাড়াতে এটি ব্যবহার করা হয়। ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রয়োজনীয় প্রোটিন সমৃদ্ধ, ক্যাস্টর অয়েল চুলের নমনীয়তা উন্নত করে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এছাড়াও, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি খুশকি এবং মাথার ত্বকের অন্যান্য সমস্যাও প্রতিরোধ করে। সেরা ফলাফলের জন্য শুধুমাত্র ঠান্ডা চাপা ক্যাস্টর অয়েল প্রয়োগ করতে ভুলবেন না।
তবে ঝটপট লেগে পরো কিন্তু! নাহলে বেজায় মুশকিল!
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন