Advertisment

দেড়শ বছর ধরে এই পুজোয় অসুরের পরনে থাকে কোট-প্যান্ট

এরা কাঠামো বিসর্জন দেন না। আদি গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জনের পর কাঠামো নিয়ে চলে আসা হয় বাড়িতেই। রথের দিন হয় কাঠামো পুজো।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নেই নেই করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে দেশ মুক্তি পেয়েছে, তা প্রায় সাত দশকেরও বেশি হল। তবে ঔপনিবেশিকতার ছায়া থেকে এখনও বেরোতে পারেনি, এমন বদনাম রয়েছে শহরের। তবে এখানে গল্পটা একটু আলাদা। ভবানীপুরের হরিশ মুখার্জি রোডের দে বাড়ির দুর্গা পুজো। এ বছর পা দিল ১৫০ বছরে। দেড় শতক ধরে চলে আসা এই পুজোয় এখনও ব্রিটিশ বিরোধী গন্ধ। দুর্গা যে মহিষাসুরকে বধ করছেন, তার পরনে কোট-প্যান্ট। মুখের গড়ন ইংরেজদের মত। মাথার চুলও সাহেবদের মতো ধবধবে সাদা।

Advertisment

সালটা ১৮৭০। ভবানীপুরের অবস্থাপন্ন দে পরিবার। পারিবারিক সূত্রে তুলোর ব্যবসা করতেন রামলাল দে। "শরতের কোনও এক দুপুরে রামলাল দের স্ত্রী তখন বাড়িতে। জনৈকা মহিলা তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে ঢুকে গেলেন দে বাড়িতে। কিন্তু তারপর আর খোঁজ মিলল না তাঁদের। রাত্রে রামলালের স্বপ্নে এলেন দেবী দুর্গা। সেই থেকেই শুরু দে পরিবারের দুর্গা পুজা", জানালেন রামলালের পঞ্চম পুরুষ সুমন্ত দে।

publive-image দে বাড়ির প্রতিমা তৈরি করছেন ম্ৎশিল্পী অজয় পাল

পরিবারের ৫০ জন মিলে এখন পুজো করছেন। কাছের দূরের আত্মীয় মিলে পুজোর ক'টা দিন শ'দেড়েক লোক তো থাকেনই দে পরিবারে। এরা কাঠামো বিসর্জন দেন না। আদি গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জনের পর কাঠামো নিয়ে চলে আসা হয় বাড়িতেই। রথের দিন হয় কাঠামো পুজো। সে দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় শারদোৎসবের প্রস্তুতি। জন্মাষ্টমীর দিন থেকে শুরু হয়ে যায় প্রতিমা গড়ার কাজ। একচালা প্রতিমা। পরিবারের সদস্যরাই মাকে নিজের হাতে সাজিয়ে দেন চতুর্থীর দিন। নারকেলের মিষ্টি তৈরি করেন বাড়ির মেয়েরাই। সব মিলিয়ে হৈহৈ করে কেটে যায় চারটে দিন।

publive-image

সমাজ তো বদলেছে, খাতায় কলমে স্বাধীনতাও এসেছে, যদিও পরাধীনতা এসেছে নতুন মোড়কে, তবু অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির জয়, দুর্গা পুজোর প্রাসঙ্গিকতাটা একই রয়ে গিয়েছে বলে জানালেন সুমন্ত বাবু। ব্রিটিশ রাজের অবসান ঘটেছে, কিন্তু সমাজের অন্ধকারগুলো মুছে যায়নি, বরং রোজ নতুন নতুন অন্ধকার এসে জাঁকিয়ে বসছে আমাদের আশেপাশে। আলোর দিকে, শুভ চেতনার দিকে এগিয়ে যাক মানুষ। তাই-ই তো এত প্রার্থনা-উৎসব-উদযাপন।

Durga Puja 2019
Advertisment