শ্রাবণ মাসে এমনিতেই শিবমন্দিরগুলোয় ভক্তদের ভিড় বেশি থাকে। তবে, বিশেষ কিছু মন্দিরে ভক্তসংখ্যা অন্যান্য মন্দিরগুলোকে ছাপিয়ে যায়। এর কারণ, ওই সব মন্দিরকে ঘিরে থাকা রহস্য। যে রহস্যের কারণে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য ভক্ত। তার ওপর জাগ্রত মন্দির বলে প্রচার থাকলে তো কথাই নেই। এমনই এক মন্দির হল মিরাটের ভূতোনওয়ালা মন্দির।
এই মন্দিরের রহস্য কী? মন্দিরের কর্তাদের দাবি, এই মন্দিরটি নাকি তৈরি করেছিল ভূতেরা। বিজ্ঞান যেখানে বলছে, ভূত বলে কিছু নেই। সেখানে এই মন্দিরের সেবায়েতরা সেসব স্বীকার করতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, মন্দিরটি রাতের বেলায় অতৃপ্ত আত্মারা তৈরি করত। আর, এভাবেই নাকি এই মন্দির তৈরি হয়েছে। তাঁরা সেবায়েত। অথচ সেই মন্দির কারা বানাচ্ছে, তা অনেক চেষ্টা করেও খুঁজে বের করতে পারেননি বলেই এই মন্দিরের সেবায়েতদের দাবি।
লাল পাথরের এই মন্দিরের বিশেষত্ব, এখানে কোনও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। মন্দিরের দেওয়াল নাকি জলে ভেজে না। কেবলমাত্র চূড়াতেই বৃষ্টি পড়তে দেখা যায়। সেবায়েতদের দাবি, রাতের বেলা মন্দির তৈরি করে সূর্যের আলো ফুটলেই ভূতরা পালিয়ে যেত। এভাবে তারা মন্দিরের চূড়া তৈরি না-করেই পালিয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ১৯৮০ সালে এই মন্দিরের চূড়া তৈরি করে নেন গ্রামবাসীরাই। জায়গাটা মিরাটের সিমভাওয়ালির দাতিয়ানা গ্রামে। ভূতেরা তৈরি করেছে বলেই মন্দিরের নাম দেওয়া হয়েছে ভূতোনওয়ালা মন্দির।
আরও পড়ুন- তারকেশ্বর মন্দির, যার টানে বছরের পর বছর বাঁক কাঁধে ছুটে চলেন ভক্তরা
গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করেন এই মন্দির অত্যন্ত জাগ্রত। মন্দিরটি নাকি বন্যা থেকে গ্রামবাসীদের রক্ষা করে। পাশপাশি, খরার সমস্যা থেকেও বাঁচাও। উত্তরপ্রদেশের মত গোবলয়ের রাজ্যে বেশিরভাগ এলাকাই কৃষিপ্রধান। তার সঙ্গে বন্যা এবং খরার প্রভাব বেশি থাকে। সেই কারণে, এই জাতীয় সমস্যা থেকে বাঁচতে গ্রামবাসীরা এই শিবমন্দিরে নিয়মিত পুজোপাঠ করেন। আর বিশেষ দিনগুলোতে এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। আশপাশের গ্রাম তো বটেই, দূর-দূরান্ত থেকে ভূতোনওয়ালা মন্দিরে পুজো দিতে ছুটে আসেন ভক্তরা।