Advertisment

'যতটা খারাপ থাকা যায়, তার চেয়েও ভয়াবহ', বিহারের মহিলা পুনর্বাসন কেন্দ্র ঘুরে জানাল টিসের দল

মহিলা পুনর্বাসন কেন্দ্রে যৌন হেনস্থা রীতিমতো রোজকার ঘটনা। রক্ষক এখানে ভক্ষক হবে এটাই যেন অলিখিত নিয়ম। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোশিশ-এর অডিটের ওপর ভিত্তি করেই বিহার সরকার ২৩ জন কর্মচারী এবং আধিকারিককে বরখাস্ত করেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
main accused brajesh thakur being taken to special court

প্রধান অভিযুক্তকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে স্পেশাল কোর্টে

ভিটেহারা, আপনহারা হয়ে কেউ এসেছিল ওরা। কেউ বা এসেছিল ঘর পালিয়ে, একটু মুক্তির জন্য। অন্ধকার ঘুপচি গলি থেকে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছিল। এখন সেসব ফুলেরা কার বাগানে ফোটে? হাতে গোনা যে কজন তাদের খবর রাখতে চেয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম 'কোশিশ'। টাটা ইন্সটিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্স (টিস)-এর এক ঝাঁক তরুণ ছাত্র ছাত্রীর উদ্যোগে প্রায় এক যুগ আগে পথ চলা শুরু হয় কোশিশ-এর। সমাজের প্রান্তিক, বিপন্ন মানুষগুলোর এক চিলতে জানলায় যথেষ্ট আলো পড়ছে কিনা, তার খোঁজ খবরটুকু রাখবে, এই আদর্শ নিয়ে ২০০৬ থেকে একটু একটু করে এগিয়ে চলা। সম্প্রতি বিহারের মুজফ্‌ফরপুরের ১১০টি পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে ঘুরে দেখল কোশিশ। কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা?

Advertisment

কোশিশ-এর প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ তারিকের ভাষায়, ''রাজ্যের জনকল্যাণ দফতরের মুখ্য সচিব নিজেই আমাদের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরগুলো পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।" ৬ জনের একটি দল গঠন করে গত এক বছর ধরে কাজটি করেছেন তারা। রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের বেশ কয়েক দফা বৈঠকের পর সদস্য বাছাই পর্ব শেষ হয়। দলে ছিলেন দিল্লির দুই এবং বিহারের চার সদস্য।

"পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকার ফলে পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখার আগেই আবাসিকদের দুর্দশা সম্পর্কে আমাদের প্রাথমিক একটা ধারণা ছিলই। কিন্তু বাস্তবের ছবিটা যে এত ভয়াবহ, এতই করুণ, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন," জানালেন অডিট দলের সদস্য আসিফ ইকবাল। মহিলা পুনর্বাসন কেন্দ্রে যৌন হেনস্থা রীতিমতো রোজকার ঘটনা। রক্ষক এখানে ভক্ষক হবে এটাই যেন অলিখিত নিয়ম। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোশিশ-এর অডিটের ওপর ভিত্তি করেই চলতি মাসের শুরুতে বিহার সরকার ২৩ জন কর্মচারী এবং আধিকারিককে সাস্পেন্ড করেছে। এদের মধ্যে শিশু সুরক্ষা বিভাগের ৬ জন সহকারী পরিচালকও রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনেছে সরকার। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, টিস-এর সদস্যদের অডিট রিপোর্ট জনসমক্ষে আনতে হবে।

অডিট চালানোর অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে ইকবাল জানিয়েছেন, "যত বেশি সংখ্যক আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলা যায়, আমরা সেই চেষ্টাই করেছি। প্রয়োজনে মাঝরাতেও আমাদের ঘুরতে হয়েছে। তবে আবাসিকদের থেকে এতটা সহযোগিতা পাব, ভাবিনি। এইসব মানুষগুলো এত সহজে কী ভাবে আমাদের বিশ্বাস করল, জানিনা।"

আরেক সদস্যের মতে এরকম পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ থাকাটাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। অডিট দলের হয়ে কাজ করার সময় নিরপেক্ষ থাকা খুব জরুরি। "অথচ আমার ব্যাক্তি সত্ত্বা বলে, এভাবে সরকারের হেফাজতে কোনও মানুষ ভাল থাকতে পারে না," বলেন তিনি।

bihar
Advertisment