Bishnu Laxmi Padmapuran Bhishma Jaya Ekadashi: প্রায় প্রতিটি মানুষ প্রতিদিনই নানা সমস্যায় দিন কাটান। সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার রাস্তা দেখানো আছে ধর্মগ্রন্থে। যার মধ্যে পুরাণেও আছে নানা কথা। এমনই এক রাস্তা দেখানো হয়েছে পদ্মপুরাণে।
কী বলা হয়েছে?
পদ্মপুরাণ অনুযায়ী, কোনও একসময় স্বর্গের নন্দনকাননে উৎসব চলছিল। সব দেবতা, ঋষি, সিদ্ধরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মনোরঞ্জনের জন্য গন্ধর্বরা নাচ-গান করছিলেন। সেই সময় এক স্ত্রী নৃত্যশিল্পী গায়িকা পুষ্যবতীর নজর গিয়ে পড়ে পুরুষ নৃত্যশিল্পী গায়ক মাল্যবনের ওপর। তাঁরা পরস্পরের প্রতি এতটাই বিমোহিত হয়ে যান যে, ভুল সুরে গাইতে শুরু করেন। যা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে দেবরাজ ইন্দ্র তাঁদের পিশাচ হওয়ার অভিশাপ দিয়েছিলেন। সেই অভিশাপে ওই দুই গন্ধর্ব পিশাচ লোকে গিয়ে পৌঁছন। সেখানে তাঁরা প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছিলেন।
কীভাবে মিলেছিল মুক্তি?
এই সময় একদিন মাল্যবান ও পুষ্যবতী ফল খেয়ে প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত অবস্থায় সারারাত হরির ভজন করেন। যা শুনে প্রসন্ন হয়ে শ্রীহরি তাঁদের পিশাচ দশা থেকে মুক্তি দেন। ওই তিথিটি ছিল জয়া একাদশী। সেই থেকে সমস্যা দূরীকরণ বা মোক্ষলাভের উদ্দেশ্যে জয়া একাদশী পালন শুরু হয়। শাস্ত্রবিদরা বলে থাকেন, এতে ভূত-প্রেত থেকে যাবতীয় সমস্যার মুক্তি মেলে।
কবে পালিত হবে?
হিন্দুধর্ম অনুযায়ী, জয়া একাদশী তিথিতে উপবাস করলে শ্রীহরি বিষ্ণু ও মা লক্ষ্মীর বিশেষ আশীর্বাদ মেলে। বাড়িতে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি বিরাজ করে। জীবনে সমস্ত আনন্দ ভোগ করা যায়। পাশাপাশি, মোক্ষ লাভ হয়। এবছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি, সোমবার, দুপুর ১২টা ২ মিনিটে জয়া একাদশী শুরু হবে। শেষ হবে ২০ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার, বেলা ১২টা ৯ মিনিটে। মঙ্গলবার পালিত হবে জয়া একাদশীর উপবাস।
আরও পড়ুন- বাংলার সরস্বতী মন্দির, শুধু বসন্তপঞ্চমী নয়, শতাব্দী ধরে আজও নিত্যপূজিতা দেবী
কীভাবে পালন করতে হবে?
সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে প্রথম ধ্যান করতে হয়। পরিষ্কার হলুদ পোশাক পরে সূর্যের প্রার্থনা করতে হয়। তারপর ভগবান বিষ্ণুর ধ্যান করে একাদশীর উপবাস আর পুজো করার প্রতিজ্ঞা করতে হয়। বাড়ির ঠাকুর ঘরে কোনও কিছুর ওপরে লাল কাপড় বিছিয়ে ভগবান বিষ্ণু ও দেবী লক্ষ্মীর ছবি রাখতে হয়। ধূপ-দীপ জ্বালিয়ে মন্ত্র জপ করে বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর পুজো করতে হয়। ভগবান বিষ্ণুকে হলুদ ফুল, ও হলুদ চন্দন অর্পণ করতে হয়। সঙ্গে, দুধ-ফল এবং মিষ্টি নিবেদন করতে হয়। তারপর বিষ্ণু সহস্ত্রনাম জপ করে ভগবান বিষ্ণুর আরতি করে প্রসাদ খেতে হয়। পরের দিন সূর্য ওঠার আগে স্নান সেরে ধ্যান করে উপবাস ভঙ্গ করতে হয়।