বরানগর কুঠিঘাটে কৃপাময়ী কালী মন্দির গড়ে উঠেছিল ১৮৫০ সালে। তার ঠিক তিন বছর পর কুঠিঘাট এলাকাতেই তৈরি হয়েছিল ব্রহ্মময়ী কালী মন্দির। এলাকায় অবশ্য এই মন্দির প্রামাণিক কালী মন্দির নামেই বেশি পরিচিত। বাংলা হিসেবমতো সময়টা ছিল ১২৫৯ বঙ্গাব্দ। মন্দির প্রতিষ্ঠার দিনটা ছিল মাঘী পূর্ণিমা। এই মন্দির প্রতিষ্ঠান করেছিলেন কুঠিঘাট এলাকার দে পরিবারের কাকা-ভাইপো দুর্গাপ্রসাদ আর রামগোপাল দে প্রামাণিক।
এই মন্দিরে রয়েছে দক্ষিণা কালীর মূর্তি। কৃপাময়ী কালী মন্দিরের মত ব্রহ্মময়ী কালী মন্দিরেও যাতায়াত ছিল শ্রীরামকৃষ্ণের। কৃপাময়ী কালীর মত ব্রহ্মময়ী কালীকেও তিনি 'মাসি' বলেই ডাকতেন। কৃপাময়ী কালীমূর্তির মত ব্রহ্মময়ী কালীমূর্তিও কষ্টিপাথরের। তৈরিও করেছেন একই শিল্পী, পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার দাঁইহাটের নবীন ভাস্কর।
এই নবীন ভাস্করই উত্তর কলকাতার হাতিবাগানের বাসিন্দা শিবচন্দ্র গোহর ১১, বৃন্দাবন বসু লেনের বাড়িতে ১৮৫০ সালে তৈরি করেছিলেন নিস্তারিণীর বিগ্রহ। ওই বছরই তৈরি করেছিলেন বরানগর কুঠিঘাটের কৃপাময়ী কালীমূর্তি। তার বছর দুয়েক বাদে কুঠিঘাটের আরেক মন্দিরের জন্য তৈরি করেছিলেন ব্রহ্মময়ী কালীমূর্তি। তারও বছর দুয়েক বাদে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের জন্য তৈরি করেছিলেন ভবতারিণীর মূর্তি।
আরও পড়ুন- কষ্টিপাথরের দেবী কৃপাময়ী, যাঁকে শ্রীরামকৃষ্ণ ডাকতেন ‘মাসি’ বলে
ব্রহ্মময়ী মন্দিরের সামনে রয়েছে লোহার ফটক। যেখান দিয়ে প্রবেশ করলে দু'পাশে দুটি ছোট শিব মন্দির চোখে পড়বে। আরও একটু এগোলে দেখা যাবে দু'টি বড় শিব মন্দির। প্রতিটি শিবমন্দিরেই রয়েছে শিবলিঙ্গ। মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি শিবলিঙ্গ। কালীপুজোর রাতে প্রথা অনুযায়ী প্রথমে দে পরিবারের কোনও শরিকের বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো করবেন। তারপর তিনি ব্রহ্মময়ী কালী মন্দিরে এসে পুজো করেন।
ব্রহ্মময়ী কালী মন্দিরে যেতে হলে হাওড়া, শিয়ালদহ অথবা শ্যামবাজার থেকে বিটি রোডগামী বাসে চাপতে হবে। নামতে হবে সিঁথির মোড়ে। সেখান থেকে কুঠিঘাটগামী অটোয় উঠতে হবে। কুঠিঘাটে নামার পর কাছেই ব্রহ্মময়ী কালী মন্দিরের দেখা মিলবে। এই মন্দিরের নিত্যপুজো থেকে যাবতীয় বিষয় দেখভাল করে 'শ্রীশ্রী ব্রহ্মময়ী ট্রাস্ট'।