scorecardresearch

তারাপীঠের মতই জাগ্রত বুংকেশ্বরীর মন্দির, সাধক শুধু তান্ত্রিকরাই, পূরণ হয় মনস্কামনা

বামদেবও এখানে সাধনা করেছিলেন। আজও আছে তাঁর আসন।

Bunkeshwari

জাগ্রত অলৌকিক দেবী বুংকেশ্বরী। এই মন্দির রয়েছে বীরভূমে। রামপুরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে পশ্চিমদিকে তিন কিলোমিটার দূরত্বে দেবী বুংকেশ্বরীর মন্দির। এই মন্দিরের পশ্চিমমুখে বামাক্ষ্যাপার আসনটি আজও আছে এখানে। এই আসনে বসেই তন্ত্রসাধনা করেছিলেন বামদেব। বুংকেশ্বরী মন্দিরে তন্ত্রমতে দীক্ষা না-হলে পৌরোহিত্য করা যায় না। জনশ্রুতি হল, এই মন্দিরে সাধারণ মানুষ রাত্রিযাপন করতে পারেন না। বিশেষ তিথিতে কৌল-তান্ত্রিকরা এসে এখানে নিশিপূজা করেন।

এমনিতে অত্যন্ত নিরিবিলি এই জায়গা। পয়লা মাঘ দেবীর বাৎসরিক পুজো হয়। বীরভূমের রামপুরহাটে দেবী বুংকেশ্বরীর নামে বুংকেশ্বরীতলা বিখ্যাত জায়গা। বুংকেশ্বরীতলায় দেবীর পুজো উপলক্ষে মেলা হয়। প্রায় ৩০০ বছর ধরে এই মেলা চলছে। বাসিন্দাদের অনেকে বুংকেশ্বরীর মেলাকে ব্রহ্মদৈত্যর মেলাও বলে থাকেন। এই দেবীর পুজো হয় দিনের বেলায়। বছরের অন্যান্য দিন দেবীর নিত্যপুজো হয়। সাধারণত প্রতি অমাবস্যায় দেবী বুংকেশ্বরীর পুজো হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দিনের বেলাতেই হয় দেবীর আরাধনা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ মনে করেন, দেবী বুংকেশ্বরী হলেন শিব-পার্বতীর মিলিত রূপ। তিনি শক্তির দেবী। ভক্তদের বিশ্বাস, শরীরের কোনও অংশ কেটে গেলে দেবীর কাছে প্রার্থনা জানালে সেই মনস্কামনা পূরণ হয়। আরোগ্য লাভের পর ওই ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে মাথায় করে মাটি বয়ে নিয়ে এসে মন্দিরের সামনে রাখতে হয়। এই মন্দিরের সম্পর্কে জনশ্রুতি হল, প্রতি অমাবস্যায় মন্দির সংলগ্ন শ্মশানে অন্তত একটি মৃতদেহ সৎকারের জন্য আসবেই। বহু প্রাচীন কয়েকটি শিমূল ও অন্যান্য গাছে ভরা জঙ্গলের মধ্যে এই শ্মশান।

মন্দির এবং তার সংলগ্ন শ্মশান এতই পুণ্যভূমি রূপে বিখ্যাত যে সেখানে সৎকারের জন্য রানিগঞ্জ এমনতী, মুঙ্গের, পাটনা থেকেও মৃতদেহ আনা হয়। এই শ্মশানের চারদিকে অনেকগুলো বেদি আছে। বিশিষ্টরা তাঁদের আত্মীয়দের দাহ করার পর, এই বেদিগুলো তৈরি করিয়েছেন।

ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী বুংকেশ্বরীর কাছে দুটি প্রাচীন সাপ রয়েছে। দেবীর বিগ্রহের সঙ্গেও দুটি সাপের মূর্তি রয়েছে। মন্দিরের সবচেয়ে কাছাকাছি গ্রাম হল খড়বন। মন্দির থেকে যার দূরত্ব অন্ততপক্ষে পাঁচ কিলোমিটার। রামপুরহাট থানার পশ্চিমে এই গ্রাম। এই গ্রামের উত্তরে বুমকদলা নামে এক জায়গায় দেবীর মন্দিরটি।

আরও পড়ুন- পুণ্যতীর্থ জলেশ্বর, বছরভর জলের নীচে থাকেন মহাদেব

মন্দির সংলগ্ন ঝিলের পাশ দিয়ে প্রবাহিত খাল কোনওদিন শুকিয়ে যায় না। এমনকী, গ্রীষ্মকালেও তাতে জল থাকে। এই খাল ত্রিবেণী নামে পরিচিত। এর জল নীল আর বেশ পরিষ্কার। এই খালের সামনের দিকটা দেখতে অনেকটা তিনটি বেণীর মত। সেচ বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা এই খালে একটি খভীর খাদের সন্ধান পেয়েছেন। তাই কেউ খালে নামতে সাহস পান না।

এই মন্দির প্রতিষ্ঠার আগে দেবীর অবস্থান ছিল প্রাচীন নিম ও শেওড়া গাছের তলায় এক বেদিতে। এক স্বপ্নাদেশের পর নিমতিতা এস্টেটের জমিদার মন্দিরটি তৈরি করিয়ে দিয়েছিলেন। প্রথমে মন্দিরটি ছিল উত্তরমুখী। ফের স্বপ্নাদেশ পাওয়ায় মন্দিরটি দক্ষিণমুখী করে নির্মাণ করা হয়েছিল। আনুমানিক ১৩ বিঘা জমি রয়েছে এই মন্দিরের নামে। কিন্তু, মন্দির এতই বাহুল্যহীন যে তা দেখে বোঝার উপায় পর্যন্ত নেই।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Lifestyle news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Bunkeshwari is the famous goddess of birbhum