বাংলায় শক্তিপীঠের সংখ্যা নেহাত কম না। বহু সাধক-সাধিকা এই বাংলায় জন্ম নিয়েছেন। যাঁদের সঙ্গে এই বাংলার মানুষজন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যোগাযোগের সুযোগ পেয়েছেন। অর্থাৎ, কেউ হয়তো স্রেফ মহাশক্তিশালী সাধক বা সাধিকার কথা শুনেছেন। আবার, কেউ হয়তো শুনে সেই সব সাধক বা সাধিকার কাছে গিয়েছেন। তাঁদের সান্নিধ্য পেয়েছেন।
আর, এই বাংলায় যে শক্তিপীঠগুলো আছে, তাতে বেড়ানোর অছিলায় পুণ্য অর্জন করেছেন, এমন ভক্তের সংখ্যাও প্রচুর। তারাপীঠ, দক্ষিণেশ্বর অথবা কালীঘাটের মত তীর্থ তো হুঁ থেকে টুঁ করতে যান, এমন মানুষের সংখ্যা প্রচুর। এরাজ্যেই বহু ভক্ত রয়েছেন, যাঁরা বছরে কোনও নির্দিষ্ট তীর্থক্ষেত্রে যান। সেখানে মানত করেন। অথবা, সেই তীর্থক্ষেত্রে দেব বা দেবীর আশীর্বাদ নেন। আর, জীবনে উন্নতি লাভ করেন।
তবে, সকলেই যে এমন বহু তীর্থক্ষেত্রের নাম জানেন তা কিন্তু নয়। বেশিরভাগ ভক্তই জানেন রাজ্যে হাতেগোনা সাত থেকে আটটি তীর্থক্ষেত্রের নাম। কারণ, অনেকেই যেখানে যাতায়াত করেন, সেই সব জায়গাকে তীর্থক্ষেত্র বলে মনেও করেন না। বরং, ঠাকুরবাড়ি বা এই জাতীয় নানা নামে ডেকে থাকেন। যদিও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে সেই সব স্থান আসলে সিদ্ধ সাধক বা সাধিকাদের লীলাক্ষেত্র।
আরও পড়ুন- স্বাধীনতা সংগ্রামীদের হাতে সূচনা, হাওড়ার বাঙ্গালপুর বয়েজ ক্লাবের পুজোর এবার শতবর্ষ
এমনই এক পীঠ হল দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বুড়া মা বা বুড়ি মা কালী মন্দির। ভক্তদের বিশ্বাস এই কালী মন্দির আসলে সতীর একান্ন পীঠের কোনও গুপ্তপীঠ। দেবী এখানে স্বয়ম্ভূ। কালো পাথরের খণ্ডকেই এখানে দেবী রূপে পুজো করা হয়। কয়েকশো বছর ধরে এখানে বুড়ি মা পূজিতা হয়ে আসছেন।
সারা বছর সকাল-সন্ধ্যে পুজো হয়। আর, শ্যামাপূজার দিন বিশেষ পুজো হয়। লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয় ওই দিন। দেবীকে সোনার গয়না পরানো হয়। রুপোর বাসনে নিবেদন করা হয় ভোগ। বলাই বাহুল্য, বহু অলৌকিক কাহিনি এই মন্দিরের সঙ্গে গোড়া থেকেই জুড়ে আছে। দেবীর কৃপায় বহু মানুষের নানারকম সমস্যা মিটেছে বলে ভক্তদের বিশ্বাস। আর, সেই কারণেই তাঁরা এই মন্দিরে যাতায়াত করেন।