যাঁর কেউ নেই, তাঁর ভগবান আছে। বাংলার এই প্রবাদে বিশ্বাস রেখে অনেক রোগাক্রান্তই ভিড় জমান বর্ধমানের জামালপুরের এক শিবমন্দিরে। ভক্তদের কাছে এই মন্দির আর পাঁচটা সাধারণ শিবমন্দিরের মত নয়। এর আলাদা একটা গুরুত্ব রয়েছে। কারণ, ভক্তদের বিশ্বাস যে এই মন্দিরে এলে রোগব্যাধি সেরে যায়। তা সে যতই জটিল ও কঠিন রোগ হোক না-কেন। শুধু তাই নয়, কারও সন্তানাদি না-হলে, এই মন্দিরে পুজো দিলে, প্রার্থনা করলে সন্তান প্রাপ্তি হয় বলেই বিশ্বাস ভক্তদের।
এখানে ভগবান শিবশংকর বুড়োরাজ রূপে পূজিত হন। তিনি অত্যন্ত জাগ্রত। ভক্তদের কথায়, তিনি আসলে ধর্মরাজ। অর্থাৎ, যাঁর কাছে গেলে ন্যায় বিচার মেলে। কালনা শহর থেকে জামালপুরের এই বুড়োরাজ মন্দিরের দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। কাটোয়া শহর থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে কাটোয়া লোকাল ধরে যাওয়া যায়। অথবা, ব্যান্ডেল থেকে ট্রেন থেকে পাটুলি স্টেশনে নেমে টোটো বা ইঞ্জিন ভ্যান ধরে যাওয়া যাবে বুড়োরাজ ঠাকুর মন্দিরে।
এই বুড়োরাজ ঠাকুর বা শিবলিঙ্গটি রয়েছে মাটির একটু নীচে। সেই কারণে মাটি খুঁড়ে বড় আকারের গর্ত বানিয়ে রাখা হয়েছে। যাতে, বুড়োরাজের আরাধনা করা যায়। প্রথমদিকে এই মন্দিরের অনেকটা মাটি খোঁড়া হয়েছিল। শিবলিঙ্গটিকে তুলে আনার জন্য। কিন্তু, অনেক খোঁড়াখুঁড়ির পরও শিবলিঙ্গটির তল খুঁজে পাওয়া যায়নি। জামালপুরের সবচেয়ে প্রাচীন এই মন্দির। যাঁরা এখানে বুড়োরাজের কাছে মানত করেন, তাঁরা ১২ মাসে ১২টি শুক্লপক্ষের সোমবার পালন করে থাকেন।
আরও পড়ুন- ভক্তরা বলেন মিনি কেদারনাথ, ১,২০০ ফুট উঁচুতে চন্দ্রনাথ মন্দির হিন্দুদের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র
প্রতিবছর নিয়ম করে বৈশাখী পূর্ণিমায় বুড়োরাজের বিশেষ পুজো ও গাজন উৎসব পালিত হয়ে থাকে। আশপাশের এলাকা তো বটেই, দূর-দূরান্ত থেকে রোগীদের আত্মীয়-পরিজনরা এই মন্দিরে আসেন। তাঁদের সমস্যা মিটলে, সেকথা শুনে আসেন অন্যান্যরা। এভাবে ক্রমশই যেন ভক্তদের ভিড় বাড়ছে এই মন্দিরে।